HEADLINE
সাতক্ষীরার পর এবার মাগুরার সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ! কলারোয়ায় এক কৃষকের ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন

ফিলিস্তিন নিয়ে কি করতে চায় ইসরাইল?

জহিরুল ইসলাম শাহীন / ২৪২
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৪

পৃথিবীর মানচিত্রে মুসলমানদের পবিত্র ভূমি, নবী-রাসুলদের জন্ম ভূমি, ইতিহাস খ্যাত আবাস ভূমি ফিলিস্তিন নিয়ে আর কত খেলবে যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট ইসরাইল? একটা দূর্বল দেশে, যেখানে নেই কোন পারমানবিক অস্ত্র, নেই কোন ক্ষেপন অস্ত্র, নেই কোন বুলেট, বোমা নেই কোন রাডার, আছে কিছু অসহায় মুসলমানদের আশ্রয়স্থল, অভিভাবকহীন পিতৃহীন, নেতৃত্বহীন মানুষ সব সময় আল্লাহর ইবাদত বন্দিগী নিয়ে বেচে আছে তাদের প্রিয় মাতৃভূমি, প্রিয় জন্ম ভূমিতে। তাদের দেখার কেহ নেই, তাদের সাহায্যের কেউ নেই, তাদের পাশেও কেউ নেই। শুধু দেখছি আরব বিশ^ সহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশ গুলো, এবং খোদ আমেরিকাতেও ফিলিস্তিনিদের বাচার জন্য, মুক্তির জন্য এবং স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে যাতে বসবাস করতে পারে তার জন্য কিছু প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এছাড়া আর তো কিছু দেখিনা। চীন, রাশিয়া, কানাডা, সৌদি আরব, ইরান, জাপান, নিউজিল্যান্ড, কানাডা অনেক কিছু বলছে। কিন্তু সাহায্যের জন্য তো কেউই এগিয়ে আসছে না। সেই সাথে মিশর, লেবানন, ইয়েমেন এরা যতটুকু পারছে সেই টুকুই করছে। আবার সবার তীর সেই আমেরিকার দিকে। যে দেশে যে হামলা হোক, যে সরকার পরিবর্তন হোক, বা স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন হোক সব সময় দেখা গেছে সবাই যুক্তরাষ্ট্র কে দোষারোপ করছে। কই সবাইতো মিলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে য্দ্ধু ঘোষনা করতে পারেন। ইসরাইল কে উসকে দেয়ার জন্য, উৎসায়িত করার জন্য, অস্ত্রের যোগান দেওয়ার জন্য অর্থের সহযোগিতার জন্য সব কিছুই এমনকি ফিলিস্তনকে মানচিত্র থেকে চিরদিনের জন্য ধ্বংস করার জন্য সব খেলা যুক্তরাষ্ট্র করছে, মেনে নিলাম। কই রাশিয়া এত বড় পরাশক্তির দেশ, চীনের আওয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হিং¯্র বাঘের মতো, ইরান, পাকিস্তান পরাশক্তির দেশ, তুরস্ক ও বেশ শক্তিশালি এবং সৌদি আরব মুসলমানদের জন্য শক্তিশালি অভয় ভূমি এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহানবী হযরত মুহম্মাদ (স:) এর জন্ম ভুমি, কই আপনারা তো সবাই মিলে ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়তে পারতেন বা এখনও পারেন। হুংকার দিয়ে কোন লাভ হয় না। মাঠে নেমে দেখানো উচিত। আপনাদের মন কাদে না। চোখে পানি আসে না। ছোট ছোট শিশু দুই/ চার/ ছয়/ দশ বারো বছরের তাদের উপরে যে ভাবে বোমা হামলা হচ্ছে, যে ভাবে গুলি বর্ষন করা হচ্ছে যে ভাবে শারিরীক ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে এবং এমভাবে মৃত্যুর কোরে ঢোলে পড়ছে এমন করুন মৃত্যু পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও ঘটছে বলে মনে হয় না। দেখলে চোখের পানি ধরে রাখা যায় না। এত নিষ্ঠুরতা, এত বর্বরতা, এত পাশবিকতা, এত নিপীড়ন, এত নির্যাতন, এত ধ্বংসযজ্ঞ কোন ভাবে সহ্য করা যায় না। কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর দায় কার। ইসরাইলে যারা বসবাস করে , যে সরকার ক্ষমতায় আছে, যে সেনা বাহিনী, যে বিমান বাহিনী, যে নৌ বাহিনী, যে স্থল বাহিনী এবং যে পুলিশ বাহিনী তারা তো সবাই আল্লাহর সৃষ্টি, তাদের শরীরটাও মায়া মমতা ভালবাসা ও মাংস রক্ত দিয়ে গড়া। তাদের কি বিবেক বলতে কিছুই নেই। তারা এতটাই নিষ্ঠুর তাদের কি স্ত্রী, সন্তান, শিশু বাবা মা নেই? তাদের কোন ধর্ম কি নেই? কেন এত নির্দয় নিষ্টুর লৌহমানব এর ভূমিকায়। যে শিশু যে স্ত্রী যে সন্তান যে বৃদ্ধা যে স্বামী হাসপাতালে অসুস্থতার জন্য ভর্তি ক্ষুধার জ¦ালায়, পানি পিপাসায় এবং রোগের আর্তনাদে চিৎকার করছে তাদের পাশে আজ কেউ নেই কেন? পৃথিবীর এত নিষ্ঠুরতা এতটাই বর্বর আগেতো কখনোও দেখিনি। এমন টার পেছনে এমন কি কারন বা এমন কি দর্শন বা এমন কি যুক্তি থাকতে পারে যে তাদের জন্ম ভূমি থেকে চিরদিনের জন্য উৎখাত করতে হবে। তারা তাদের নিজস্ব জন্ম ভূমিতে পৈত্রিক বাড়ীতে থাকতে পারবে না, বসবাস করতে পারবে না, স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে পাবে না। এখন শুধু তারাই টারগেট না। আজই নির্বিচারে হামলার পাশাপাশি পশ্চিম তীরে প্রাই অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলের এই লৌহ মানব নিষ্ঠুর বর্বর দয়া মায়াহীন নেতা নেয়াহু এবং তার সৈনিক বাহিনী। মাহমুদ আব্বাসের চারন ভূমি ফিলিস্তিনি কর্র্র্তৃপক্ষ আমরা যতদুর জানি ইসরাইলের সংগে অনেক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করে চলেছেন, কিন্তু ইসরায়েল তাদের কে বিভিন্ন ভাবে উস্কানি দিচ্ছে এর ফলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাদের জনগনের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। অন্য দিকে ইসরাইল কে খুশি করতে পারছে না। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিক থেকে ভোর থেকে সুনসান নীরবতা ভেদ করে ইসরাইল বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় কেন্দ্র স্থলে তুমুল গোলাগুলি শুরু করে দিল। এবং কয়েক ডজন সাজোয়া যান নিয়ে এসেই ঐ এলাকায় তল্লাশী অভিযান চালাছে। সদর দপ্তর থেকে মাত্র এক কিলো মিটার দুরে সেখানে তারা একটা দোকান বন্ধ করে দিলো। এবং সেই দোকানের বাইরে তার একটি পোষ্টার সেটে দিল, যাতে লেখা ছিল “এই দোকানের মালিক সন্ত্রাসবাদ কে সমর্থন ও সহায়তা করে” কথিক আছে কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তানি সদর দপ্তরের নিকটে রামাল্লায় যে কোন সন্ত্রাস মহড়া প্রতিরোধে বিপক্ষে কঠোর অবস্থানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ থাকে সুতরং সদর দপ্তরের এমন একটি জায়গায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা গোলাবারুদ নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর সংগে তুমুল লড়াইয়ে জড়িয়েছেন। বিষয়টি অত্যন্ত আশ্চর্যের। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েল বাহিনী নিয়মিতই অভিযান চালায়। কিন্তু সম্প্রতিক এই অভিযানের গুরুত্ব অনেক বেশি। রামাল্লা ভিত্তিক বিশ্লেষক ইসমত মনসুর বলেছিলেন “এই অভিযানের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী শক্তি প্রদর্শন করা। এবং ফিলিস্তিনি জনগন যাতে ভয় পেয়ে শক্তিশালী আক্রমনের আগেই যেন ঐ স্থান ত্যাগ করে।” বিশ্লেষক ইসমত মনসুর বলেন “আমরা যদি ইসরায়েলি বাহিনীর এই কর্মকান্ড কে ইসরায়েলের প্রধান মন্ত্রি নেতা নিয়াহু এবং অর্থ মন্ত্রী বেজালেলঘœত্রিচের সাম্প্রতিক বিবৃতির সাথে মিলিয়ে দেখি তাহলে দেখা যাবে” সেখানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেবল উস্কানি ও বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। ইসরায়েলের মূলত উদ্দেশ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের বিব্রত করার পাশাপাশি আরও দুর্বল করে তোলা। গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ গাজার শাসক হামাসের যোদ্ধরা ইসরায়েলের দক্ষিন অঞ্চলে হামলা চালান। এ সময় অন্তত ইসরায়েলের প্রায় ১৩০০ এবং প্রায় অর্ধাশতাধিক বিদেশি নাগরিক নিহত হয় তার বেশির ভাগ ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের। এর বাইরে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে তারা বন্দী করে গাজায় নিয়ে আসেন। তাক্ষনিক হামাসের হামলায়র প্রতিক্রিয়া ইজরাইল গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা শুরু করে। সেই ৭ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত ইসরায়েল বাহিনীর নির্বিচার হামলায় প্রায় পঁচিশ হাজারের উর্দ্ধে ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে শিশু নিহত হয়েছেন প্রায় তেরো হাজারের মত এবং নারীর সংখ্যা ও বেশ। গাজায় ইসরায়েল বাহিনীর হামলা যখন তৃতীয় মাসে পড়েছে তখন ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্র সহ বিদেশি কর্মকর্তারা একটি বিষয় নিয়ে খোলা খুলি কথা বলছেন। আলোচনার বিষয়বস্তু হলো ইসরায়েল যেমনটি বলছে সে অনুয়ায়ী যদি হামাসকে নিমূল করা হয় তাহলে যুদ্ধ পরবর্তী গাজায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের চিত্রটি কেমন হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বলছেন তারা চায় না গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী সাময়িক কয়েক টা মাসের জন্য অপেক্ষা করুক। গাজা দখল কিংবা উপত্যাকার বাসিন্দাদের ভিটে মাটি ছাড়তে বাধ্য করার ও বিরোধিতা করছে মার্কিন সরকার। গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মাহমুদ আব্বাস বলেছিলেন। একটি রাজনৈতিক সমাধানের ও পর গাজায় প্রত্যাবর্তেনের বিষয়টি নির্ভর করছে। এই সমাধানে পৌছাতে হলে ১৯৬৭ সালের নির্ধারিত সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়ে তোলা ও প্রতিষ্ঠা করা যাবে। এর রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম। তবে ফিলিস্তিন কর্র্তৃপক্ষ নিয়েও সমস্যা রয়েছে। আবার একথাও সত্য পি. এর নেতৃত্ব নির্ধারন করতে প্রায় দুই দশকে কোন নির্বাচনের আয়োজন করা হয়নি। বিশেষ করে পশ্চীম তীরের বিরজেইভ ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আবদেল জাওয়াদ হামায়েল মনে করেন, গাজার যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থান কেমন হবে তা এত দ্রæত আঁচ করা বা বিচার করা সম্ভব নয়। কারন আমরা এখনও যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি। এটা উল্লেখ করা গুরুত্ব পূর্ন যে, এখনও পর্যন্ত গাজায় হামাসের লক্ষ্য সফল হয়নি। ইসরায়েল এর অর্থ ভবিষ্যতে কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমরা একনই কথা বলতে পারি না। এখনও পর্যন্ত ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ি গাজায় তারা যে পরিসরে হামলা চালাচ্ছেন তার ব্যপকতা কমানো হবে। তিনি আরও বলেন ইসরায়েলের এই পরিকল্পনার অর্থ হলো গাজার আরো ভেতরে গিয়ে অভিযান চালাবে তারা। এতে করে দীর্ঘ সময় ধরে তারা উপত্যকাটিতে সামরিক উপস্থিতি ধরে রাখতে পাবে এবং হামাসদের নিরস্ত্র করতে পারবে। আবদেল জাওয়াদের মতে, এমন টি হলে কয়েক মাস, কিংবা বছরের পরে বছর ধরে ইসরায়েলী বাহিনী গাজায় যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে। ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজন বা স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের হত্যা বা গ্রেপ্তার করতে খুব কম বাধা পাবে তারা। ১৯৯৩ সালে ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক শান্তি চুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। এটি ছিল অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ বছর মেয়াদের এই কর্ত্তৃপক্ষ দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যাকায় একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। আসলে চুক্তির ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে কিন্তু ইসরায়েলের দখলদারী, কঠোর বিধি নিষেধ, অবৈধ ভাবে ভূমি দখল ও বসতি স্থাপনের মুখে রাষ্ট্র গঠনে ব্যর্থ হয়েছে পিএ।এর মধ্যে ২০০৭ সালে হামাসের কাছে গাজার নিয়ন্ত্রন হারায় তারা। পশ্চিমতীরের ইসরায়েলি ঠিকাদার হিসেবে মনে করেন, আসলে চুক্তিতে পিএ কে ইসরায়েলের সংগে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির কথা বলা হয়েছে। “নিরাপত্তা সমন্বয়ের নামে এই নীতি ব্যাপক ভাবে সমালোচিত হয়েছে। এতে সশস্ত্র প্রতিরোধ দমন, গ্রেপ্তার সহ বিভিন্ন বিষয়ে ইসরায়েলকে সহায়তার কথা বলা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন পশ্চিমতীরের ক্রিজাস্থান, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি দখল দারদের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করছে পিএ। গত বছরের ডিসেম্বরে বেনি আমিন নেতা নিয়াহুর নেতৃত্ব ডান পন্থী দল ইসরায়েলের ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা পিএ কে ভেঙ্গে দিতে চেয়েছে। এমন কি পিএ যদি ইসরায়েলের সাথে সমঝোতা করে চলে এবং পশ্চিমতীরে উল্লেখযোগ্য কোন বাধা ছাড়াই ইসরায়েলিদের বসতি স্থাপনের সুযোগ করে দেয় তার পর ও তারা পিএকে ভাঙ্গতে চায়। এদের ক্ষমতা বা সমঝোতা বা সহযোগিতা নেতানিয়াহুর প্রশাসন দেখতে চায় না।
আবদেল জাওয়াদ বিশ^াস করেন যে শেষ পর্যন্ত পিএ যদি গাজা শাসনের দায়িত্ব পায় তাহলে তারা ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল যেসব ফিলিস্তিনি ভূখন্ড দখলে এনেছিল তা একত্র হয়ে যাওয়ার একটি সম্ভবনা থাকবে। এতে করে দুই রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে আলেচনা শুরু করলে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে শত শত অবৈধ বসতি স্থাপনকারীকে ইসরায়েলে সরিয়ে নিতে হবে। এ সব সুরক্ষিত অবকাঠামো গড়ে তুলে বসবাস করছেন অন্তত সাত লক্ষ ইসরায়েলি। অবকাঠামো গুলোর বেশির ভাগই যে সব জমিতে করা হয়েছে সে গুলো আংশিক বা পুরোপুরি মালিকানা রয়েছে ফিলিস্তিনিদের । আবদেল জাওয়াদ বলেছেন, নেতা নিয়াহুদের স্বপ্ন দুই রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান যেন ব্যর্থ হয়। ডান পন্থীদের কাছে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন তাদের সমর্থন থাকলে তিনি পশ্চিমতীরে নির্বিঘেœ বসতি স্থাপন অব্যহত রাখতে পারবেন। একই সংগে গাজায় পিএর নেতৃত্বের সংগে আলোচনা বা কুটনীতিতে বাধা দিতে পারবেন।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খবর নিজারবনতে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার পর ২০২১ সালে জুনে বিক্ষোভ দেখা দিলে আব্বাসের পদ ত্যাগের দাবী ওঠে। এই দািব আরো জোরালো হয়েছে বিভিন্ন সময় ফিলিস্তিনি দের ওপর ইহুদি বসতি স্থাপন কারীদের আক্রমনের জেরে। গাজায় সর্বশেষ ইসরায়েলি হামলার শুরুর পর তা নতুন গতি পেয়েছে। বর্তমান অবস্থার কারনে এবং ২০২১ সালের পর থেকে অর্থনৈতিক মন্দা যাওয়ার কারনে গাজায় পিএর সমর্থন অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
গাজা শহরে আল আহলি হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলায় কয়েক শত মানুষ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গত ১৭ অক্টোবর পশ্চিমতীরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সে সময়ে জেনিনে ফিলিস্তিনের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ১২ বছরের এক মেয়ে শিশু মারা যায়। ইসরায়েল সহিংস সামরিক আক্রমন চালানোর পাশাপাশি অবৈধ বসতি স্থাপন জোরদার করায় ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিক সমাধানের পথ ক্রমে সংকুচিত হয়েছে। পক্ষান্তরে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সশস্ত্র প্রতিরোধের আকাংখা ও নতুন করে মাথা চড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পশ্চিমতীরের উত্তরঞ্চলীয় শহর জেনিন, নবালুঘ ও তুলকারেমে এই পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। হামায়েল বলেন, রামাল্লা সহ পূর্ব অঞ্চলে প্রতিদিন ইসরায়েলি সেনাদের তল্লাশি অভিযান নতুন কিছু নয়। এখানে নতুন হচ্ছে ইসরায়েলি সেনা বাহিনীর সাথে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সশ^স্ত্র সংঘাত। তিনি আরো বলেন ফিলিস্তিনির জনগন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে তাদের জাতীয় প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করে। এমন কি আমি মনে করি না। এটি ঘটেছে এ কারনে যে ফিলিস্তিন কর্ত্তপক্ষ এতদিন ধরে যে ভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সামলেয়ে আসছে তা নিয়ে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সু
স্পষ্ট লক্ষ্য অর্জনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের চরম ব্যর্থতা এবং পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যাকায় ইসরায়েলের দমন মূলক অবস্থান সত্বেও তাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা অব্যহত রাখায় তাদের বিষয়ে জনগনের মধ্যে এই অবস্থান তৈরী হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে এবং ভূখন্ডের সত্বা নিয়ে উভয় দেশের ভেতরে যাই ঘটুক এ মুুহুর্তে যে কোন মূল্যে যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত এবং বিভিন্ন পরাশক্তির ও উন্নত দেশ গুলোর সাহায্য নিয়ে এবং বিশেষ করে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনির প্রতিবেশী দেশ গুলোকে সংগে নিয়ে একটা শান্তিপূর্ন সমাধানের পথ খুজে বের করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তা না হলে আরো কত মানুষের প্রাণ যাবে তার হিসেব কেউ দিতে পারবে না।

লেখক: জহিরুল ইসলাম শাহীন
সহঃ অধ্যাপক
বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ