HEADLINE
সাতক্ষীরার পর এবার মাগুরার সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ! কলারোয়ায় এক কৃষকের ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন

মেধাবী ও ক্যারিয়ার রাজনীতিবীদ বাংলাদেশে এ মুহুর্তে প্রয়োজন

জহিরুল ইসলাম শাহীন / ২৭৫
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৪

কে কখন বড় খেলোয়ার হচ্ছে আবার কখন ও তলানীতে যাচ্ছে সেটা বোঝা খুব মুশকিল। কখন মহানায়ক, আবার কখন খল নায়ক, কখনো বা পড়তি বা কখনো বা উঠতি। এগুলো নির্ভর করে আতœ বিশ্বাসের উপর এবং কতটুকু নিজের উপর নির্ভর করা যায় তার উপর। একটু উদাসীন বা অমনোযোগি হলেই বিপদ। ৮০ বা ৯০ দশকে ইতালি ফুটবল টিমের গতি ও শক্তি বিশ্বকাপ ফুটবলকে মাতিয়েছিল। সেই ইতালি পর পর ২টি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেল না। বাছাই পর্বে বিদায় নিতে হয়েছিল। যে জার্মানী ও লং পাসের খেলার মাধ্যমে বিশ্বকাপে একের পর এক রেকর্ড তৈরী করলো সেই জার্মানী ও বর্তমান সময়ে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। চারদিকে মেসি, মেসি, লিওনেল মেসি, মেসি ইউরোপে বিভিন্ন ক্লাবে খেলে দলকে চাম্পিয়ানশিপ এনে দিয়েছে অনেকবার এবং ফিফা র‌্যাংকিং এ অনেকবার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। কিন্তু নিজ দেশকে বিশ্বকাপে কিছুই দিতে পারে নাই। শেষ মেষ ২০২৩ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে এবং চার দিকে শুধু মেসির নাম শোনা যায়। বিশ্বের সব দেশ এক বাক্যে জানে এবং চেনে এক মাত্র ফুটবল দল ব্রাজিল যারা অত্যন্ত শৃংখলা বদ্ধ ভাবে একে অপরের মধ্যে সুন্দর বোঝা বুঝির ভেতর দিয়ে বল একের পর এক পাস করে গোল কিপারের চোখ ফাকি দিয়ে গোল করে। ছন্দের তালে তালে নান্দনিক ফুটবল উপহার দেয়। বিশ্বের একমাত্র দল ব্রাজিল, যে দেশের সেরা খেলয়াররা সারা বিশ্বে অত্যন্ত সু পরিচিত। তাদের মধ্যে বø্যাক পার্ল, বা কালো মানিক, পেলে, সক্রেটিস, জিকো, রোনালদো, রোনালদিনহো, রোমারিও, বেবেতো, ডুঙ্গা, কার্লোস প্রমুখ এবং সর্বশেষ নেইমার। কিন্তু বিগত দুইটা বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ভালো খেলেছে এবং এর পর যেই হেরে গেছে তাদের নামও মুছে যেতে শুরু করেছে এমন কি বার বার বিশ্ব র‌্যাংকিং এ শীর্ষ স্থান থেকে দিনে দিনে বিচুতি হচ্ছে। পর্তুগালের রোনালদোও অনেক বার নিজের টিম ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে খেলে এতটাই সাফল্য পেয়েছে যে বিশ্ব ফুটবলে তারা শীর্ষ স্থান অনেকবার ধরে রেখেছে কিন্তু নিজ দেশ পর্তুগালের জন্য কিছুই করতে পারছে না। ২০২৩ বিশ্বকাপে অনেকটা নিষ্প্রভ কিন্তু সর্বাধিক গোল নিজের দখলে। অপর দিকে ইংল্যান্ডের ও একই অবস্থা। যখন বেকহ্যাম ছিলেন তখন ইংল্যান্ডের নাম ছিল। এই ভাবে রুডগুলিত, বেনজা মামা সহ জাপান, কোরিয়া, উরুগুয়ে, ডেনমার্ক সুইজার ল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও ফুটবল খেলায় অনেকটা এগিয়ে আছে। কেউ কেউ ভালো পারফর্ম করে। আবার যখন তখন খারাপ করে। এটাই একটা দলের বা একজন খেলোয়ারের পরিনতি, সর্বশেষ আসি ফ্রান্সের বিশ্বকাপে পর পর দুই বারের ফাইনালে উঠার গল্প। একা এম বাপ্পে গোলের রেকর্ড সহ বিশ্বের দরবারে অল্প বয়সী খেলোয়ার হিসেবে নাম লিখিয়েছেন। সেই একমাত্র ফ্রান্সের খেলোয়ার যার সুন্দর নৈপুন্যে ফ্রান্স পর পর দুই বার ফাইনালে খেলে একবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার রানার্সআপ হয়েছে এবং আরেক বার ব্রাজিলকে ফাইনালে হারিয়েছে জিনেদিন জিদানের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ছিল। মূল কথা হচ্ছে একই খেলোয়ারের নৈপুন্যে কখন ও একটি দল ভালো অবস্থায় পৌছে যায় আবার কখনও নিজের নাম ক্যারিয়ারের জন্য দলকে শোচনীয় পরাজয় বরন করে নিতে হচ্ছে। এটাই ইতিহাসের নিয়ম। কখনও ট্রাজেডি আবার কখনও বিজয় এবং সফলতা বা ব্যর্থতা, এবার আসা যাক এই মুহুর্তে সব চেয়ে জন প্রিয় ক্রিকেটের কথায়। ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। বাংলাদেশ যখন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে স্থান করে নিলো তখন যতদুর সম্ভব আমার মনে পড়ে দলের কোচ ছিলেন গর্ডান গ্রীনিজ জিনি একজন ওয়েষ্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার এবং সেই সময় বাংলাদেশ দলকে অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আকরাম খান। খেলাটি হয়েছিল মালয়েশিয়ার কিলাত ক্লাব মাঠে কেনিয়ার বিরুদ্ধে বৃষ্টি বিঘিœত মাঠে বাংলাদেশকে ২৫ ওভারে ১৬৬ রান করতে হবে জেতার জন্য। ক্রিজে ছিলেন আকরাম খান ও মোহাম্মদ রফিক। খুব ভালো ভাবে শেষ বলে সেই রান করে দলকে জয় এনে দেয়। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলো এবং সেই থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশের গৌরব বয়ে নিয়ে আসতে শুরু করেছে। প্রথম বিশ্বকাপে পদার্পন করেই বাংলাদেশ পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ে কে হারিয়ে চমক দেখালো যার ফল শ্রæতিতে অল্প সময়ের মধ্যে সেই সময়ে আই,সি,সির চেয়ারম্যান ভারতের জগ মোহন ডালমিয়া টেষ্টস্ট্যাটাস এনে দিয়ে ছিলেন বাংলাদেশ দলের জন্য। সর্ব প্রথম বাংলাদেশ টেষ্ট খেলেছিলো ভারতের সংগে যেখানে রাহুল দ্রাবিড়, শোচিন টেনডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলীর মত খেলোয়াড় এর সংগে খেলে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান করেছিলো। এবং নাইমুর রহমান দূর্জয় বেশ কয়েকটা উইকেট ও ভালো রান ও করেছিলেন। এটাও একটা রেকর্ড। চার দিকে আকরাম খান, নাইমুর রহমান দুর্জয়, হাবিবুল বাসার সুমন, মোহাম্মদ রফিক ও আ: রাজ্জাকদের জয় জয় কার অবস্থা। আবার তারা শেষের দিকে এসে খলনায়ক, ভালো পারফর্ম করতে পারছেন না। এই ভাবে পরবর্তীতে নাফিজ ইকবাল, মোহাম্মদ আশরাফুল, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহম্মেদ, মেহেদি মিরাজ, মোহম্মদ রুবেল হোসেন এবং পরিশেষে যে দুই জন বিশ^খ্যাত নামী দামী খেলোয়ার মাশরাফি বিন মোর্তজা এবং সাকিব আল হাসান তারা তাদের শক্ত অবস্থান বাংলাদেশের ক্রিকেট এখনও ধরে রেখেছেন। ক্রিকেট বিশ^ রাংকিংয়ে সাকিব আল হাসান প্রায় সময় শ^ীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে। এ মুহুর্তে মাশরাফি বিন মোর্তজা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছে। যাই হোক আকরাম খান, খালেদ মাসুদ পাইলট, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম এবং মুস্তাফিজুর রহমানের মত ক্রিকেটারদের ও ধস নেমেছে। ২০২৩ সালের বাংলাদেশে ক্রিকেট দল বিশ^কাপে এতোটা ভালো পারফর্ম করতে পারে নাই। তা বলার দরকার পড়ে না। ক্রিকেটারদের বিভিন্ন ভাবে অসম্মান করা হলো। আমাদের ক্রিকেটে কারা খেলবেন কে হবেন অধিনায়ক আমরাই তা জানতাম না। এক সংগে অনেক দিন অভিন্ন দল নিয়ে খেলা তো দুরের কথা। আমাদের অধিনায়ক ছিলেন তামিম ইকবাল। আফগানিস্তানের সাথে সিরিজ খেলতে গিয়ে তিনি ঘোষনা করে ফেললেন তিনি আর অধিনায়ক থাকবেন না। অনুরোধ করে সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক বানানো হলো। বিশ^কাপের আগে নিউজিল্যান্ড এসেছে বাংলাদেশে সেই সিরিজে নতুন অধিনায়ক নিজেই থাকলেন না। তাকে বিশ্রাম দেওয়া হলো। সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান অধিনায়ক টেলিভিশনে এবং অনলাইনে হাজির হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেন এই টিম নিয়ে বিশ^কাপে যে ভালো করা যাবে না এটা নিশ্চিত করে বলা গেছে। কারন তাদের ভেতরে যে অন্তর্দ্ব›দ্ব তা প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। আবার তার মধ্যে ব্যাটসম্যানরা কোন পজিশনে ব্যাট করবে বা খেলবেন তা যেন লটারির মাধ্যমে ঠিক করা হচ্ছিল। খেলোয়াড় দের ভেতরে যদি মনস্তাত্বিক দন্ধ দানা বেধে উঠে এবং সেটা যদি পরিশেষে রাজনীতিতে রূপ নেয় এবং কোচ যদি রাজনীতির ভেতরে পড়ে যায় সেখানে সব কিছু শেষ হয়ে যায়। পাকিস্তান ক্রিকেট দল তার উৎকৃষ্ট উদাহরন। আর যদি খেলোয়াড়বা শৃংখলাবদ্ধ করে থাকে যার যা অবস্থান যদি সেই অবস্থান রাখা যায় সেই টিম কখন ও খারাপ পারফর্ম করে না। অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত তার উৎকৃষ্ট উদাহরন। ডেভিড কোংকের লেখা বই দ্যা জিনিয়াস “ইন অল অব আস” এর সহজাত প্রতিভা বনাম চেষ্টা নিয়ে বিশ্লেষন করা হয়েছে। বই টা শুরু করা হয়েছে বেসবলের কিং বদন্তি ট্রেড উইলিয়ামস প্রসঙ্গ দিয়ে। ট্রেড উইলিয়াম ছিলেন বেসবলের সুপার ম্যান, হিটার বিগ হিটার। অন্যরা মনে করতো এ ব্যাপারে তিনি জিনিয়াস। ক্রিকেটে ঠিক তাই, সনাৎ জয়সুরিয়া, ব্রায়ান লারা, সাঈদ আনোয়ার, গিলক্রিষ্ট , রসটেলর, হার্ডিক প্যান্ডে ইত্যাদি। এরাই জিনিয়াস এর পরে জিনিয়াস হিসেবে দল কে জেতাতে প্রবাদে আছে ঘড় ৎরংশ হড় মধরহ. কিন্তু বিভিন্ন খেলার জিনিয়াসরা বলছেন, না প্রতিভা নয়। “অনুশীলন, অনুশীলন, অনুশীলন অর্থাৎ “চৎধপঃরপব সধশবং ধ সধহ ঢ়বৎভবপঃ” খেলার মধ্যে প্রয়োজন নিয়মাবার্তা, সুপার দৃষ্টি শক্তি নয়। ভারতের ক্রিকেটের ক্ষেত্রে আমাদের যেমন ধারনা বিরাট কোহলি তার প্রিয় ক্ষেত্রটা এবং খেলাটা বেছে নেন। সেটা হলো আমাকে হাল ধরতে হবে। ভারতকে জেতাতে হবে এবং শচিন কে টপকাতে হবেই। সেটাই সে খেলে দেখিয়েছে। প্রমান করেছে নিয়মমেনে মনোযোগী হয়ে একনিষ্ট ভাবে অনুশীলন করলে কাংখিত লক্ষে পোছানো যায়। অতীতের সব রেকর্ড সে ভেঙ্গে চলেছে। এটা শুধু ভারতের জন্য নয় গোটা এশিয়া মহাদেশের জন্য সম্মানের ও গর্বের। বর্তমানে বাংলাদেশের কোন ভাল ফুটবলার, ভালো ক্রিকেটার, ভালো রাজনীতিবিদ, ভালো নেতা, ভালো অধ্যক্ষ, ভালো প্রধান শিক্ষক, ভালো হাজী, ভালো হাফেজ, ভালো রাষ্ট্র নায়ক, ভালো মন্ত্রী, ভালো কবি, ভালো সাহিত্যিক, ভালো গায়ক যাদের কথাই বলি না কেন তারা সবাই হতে যাচ্ছে নেতা। শিক্ষকদের নেতা, হুজুরদের নেতা, বিভিন্ন দলের নেতা, পেশি শক্তির নেতা, কবিদের নেতা, আসলে হচ্ছে ফাকির কাল, লেখা পড়া নেই, বাস্তবমুখি চিন্তা ভাবনা নেই, ভালো ব্যবহার নেই, ভালো কিছু জানা নেই, মেধা নেই, ঘুষ ও অর্থ বানিজ্যের ভেতর দিয়ে হতে হবে। প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, দলের সভাপতি, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নগরের মেয়র এবং বিভিন্ন এলাকার এমপি। রাস্তাঘাট, বিল্ডিং নির্মান, বাসটার্মিনাল থেকে, শিল্প কল কারখানা থেকে, বিভিন্ন নিয়োগ বানিজ্য থেকে স্কুল কলেজ থেকে কত পরিমান আতœসাৎ করা যায়, কত টাকা ফাকি দেওয়া যায়, কত ঘুষ বানিজ্য করা যায়। নামে বেনামে কত ভাউচার তৈরী করা যায়, এটাই এখন কাজ। সুতরাং প্রকৃত মেধার রূপায়ন হচ্ছে না। অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করা হচ্ছে। তাহলে আমরা কিভাবে ড: মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কে আমাদের মাঝে খুজে পাবো। কিভাবে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হবো। কি ভাবে কবি নজরুল হবো, কিভাবে শেখ সাদী হবো, কি ভাবে রবীন্দ্রনাথ হবো, কি ভাবে এক জন সৎ আদর্শবান শিক্ষক হবো, কি ভাবে মওলানা ভাসানী হবো, কি ভাবে শের-ই বাংলা একে ফজলুল হক হবো, কি ভাবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী হবো, কি ভাবে নূর হোসেন হবো। সামনে কোন পথ খোলা আছে বলে আমার মনে হয় না। দুর্নীতিবাজরা সমস্ত জায়গা দখল করে নিয়েছে। অতীতে একটা সময় ছিলো যখন এই দেশে নেতারা জনগনের মুক্তির জন্য, জনগনের সুবিধার জন্য রাস্তায় নেমে আসতেন, দাড়াতেন, শিক্ষকরা তাদের প্রান প্রিয় ছাত্র ছাত্রীদের এবং তাদের সন্তান তূল্য শিক্ষার্থীদের দেখভালো করার জন্য শুধু প্রতিষ্ঠান নয় এমন কি বাড়িতেও ছুটে যেতেন। সামনে শুধু বাধা আর বাধা। বাধায় ভয় না পেয়ে, শত্রæদের ভয়ে শংকিত না হয়ে বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিব, মাওলানা ভাসানীরা সহ অনেক ছাত্র নেতারা জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাস্তায় নেমে আসতেন। তখনকার দিনের নেতারা জনগনের জন্য, দেশের জন্য, দেশের কল্যানের জন্য,দেশের উন্নয়নের জন্য চাষীদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন করার জন্য শ্রমিক দের নায্য দাবী আদায়ের জন্য ভোগ বিলাস না করে, রাস্তার উপর বা বাড়ীতে চৌকির উপর বিশ্রাম নিতেন বা ঘুমাতেন। সাবেক প্রধান মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দীন আহম্মেদ তার উৎকৃষ্ট উদাহরন। কমরেড অমল সেন, নির্মল সেন, জসিম উদ্দীন মঙ্গল ও তাদের মধ্যে আছেন, এদেশের অনেক সাম্যবাদী নেতা, কমিউনিষ্ট নেতা তাদের বাবাদের জমিদারি ছেড়ে চলে এসে সর্বস্ব ত্যাগ করে শোষিতদের দলে নাম লিখিয়েছেন বছরের পর বছর জেল খেটেছেন, পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। মৃত্যুর সংগে পাঞ্জা লড়েছেন কিন্তু কারোর ভয়ে ভীত হয়ে আদর্শ কে ত্যাগ করেন নি। আর এখন রজনীতি আর রাজনীতিবীদদের হাতে নেই। শিক্ষানীতি আদর্শ মেধাবী প্রতিভাবান শিক্ষকদের হাতে নেই, সমাজনীতি গুনি জনদের হাতে নেই। সত্যি কথা বলতে গেলে ক্যারিয়ার রজনীতি বীদই তো নেই। প্রকৃত সৎ গুনী শিক্ষক ই তো নেই। তাহলে দেশের কর্তা, সামরিক কর্তা, প্রশাসনিক কর্তা, বিনান বাহিনী, নৌ বাহিনী কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, অবসর প্রাপ্ত বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি, কলেজের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকরা অবসরের সাথে সাথে ভোটে দাড়াচ্ছেন। আবার অবসরের যাবার আগেই বিভিন্ন দলের রাজনীতি বিদদের সাথে কখনও গোপনে বা প্রকাশ্যে অনুগত্য প্রকাশ করেছেন আর বড় বড় ব্যবসায়ীরা আগে ভাগেই মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। দেশটা এখন মগের মুল্লুক, যে যেভাবে হোক, কৌশলে হোক, পেশীসক্তির দিয়ে হোক, অর্থশক্তি দিয়ে হোক, গায়ের জোরে হোক, এমপি আমাকে হতেই হবে। এই সাথে পাল্লাদিয়ে মনুষ্যত্ব বিকৃত করে সততা বিসর্জন দিয়ে, হীনস্বার্থ চরিতার্থ করে বড় বড় শক্তিশালী ছাত্র নেতারা দামী দামী গাড়ীতে ঘুরছেন, কয়েকটা বিল্ডিং, ফ্লাটের এবং কল কারখানার মালিক হচ্ছেন। এত অর্থ সম্পদের উৎস কোথা থেকে আসছে। অনেকের খবর আমি রাখি, ছোট ছোট সরকারী চাকুরী, স্বল্প বেতন ভুক্ত এবং গ্রাম পর্যায়ের ও নেতা উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে ছাত্র নেতারা শুধু যে বাড়ির মালিক, গাড়ির মালিক তা নয় তারা মিল কলকারখানার মালিক, বড় বড় নাম করা ক্লিনিকের মালিক, হাসপাতালের মালিক বা কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক, আবার অত্যন্ত হাস্যকর ব্যপার বাংলাদেশের অনেক সংস্কৃতি মনা পুরুষ মহিলা, সিনেমার, যাত্রা গানের, নাটকের পাশর্^ অভিনেতা বা অভিনেত্রী, নায়ক বা নায়িকা এমন কি খেলোয়াড় রাও যারা কখনও কোন রাজনীতির সাথে জড়িত হননি, বা রাজনীতি কাকে বলে জানেনা, দলের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে জানে না। বা লেখাপড়া কতদুর সেটাও অজানা। নির্বাচনকে গ্রহন যোগ্য করার জন্য অত্যন্ত কৌশলে তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। খবরের কাগজে শিরোনাম হচ্ছে অমুক ব্যাংকে অত টাকা, শিরোনাম হচ্ছে ই- বিজনেসের নামে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আতœসাৎ করে পাচারকারীরা বা প্রতারকেরা পালিয়ে যাচ্ছে। শিল্পি, কবি, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়, ও সংস্কৃতিক কর্মীরা আজ লাভবান হচ্ছে, পুরস্কৃত হচ্ছে তাদের অবদানের জন্য নয়, তাদের কর্মের জন্য নয়, তাদের শ্রমের জন্য নয়, রাজনৈতিক আনুগত্যের মাপকাঠিতে উত্তীর্ন হওয়ার জন্য। প্রবাদে আছে পুজিবাদের দিকে মানুষ যখন ঝুকি নেয় বা পুজি গড়ে ওঠে, নিজের স্বার্থেই পুজি নিজেকে পাহারা দেয়। সুশাসন আছে একথা আমরা শুনি, কিন্তু আমাদের এই নৈরাজ্যের নিপীড়ন তন্ত্র, শোষন তন্ত্র, অন্যায় অবিচার তন্ত্র, এবং লুট তন্ত্র নি: শেষ বা বিনাস হয় না কেন। এর জবাব দেবে কে? তাই এখন বলার সময় এসেছে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আপনি আবার আপনার দল নিয়ে জোটের শরীকদের নিয়ে অনায়াসে ক্ষমতায় যাচ্ছেন এতে কোন সন্দেহ নেই। আপনার প্রত্যেকটা বক্তব্য আমি মনোযোগ সহকারে শুনি আমার খুব পছন্দের জ্ঞানগ্রহ্য। প্রত্যেকা বক্তব্যের ভেতরে আপনি দুর্নীতি ঘুষ, প্রতারনা, লুটতরাজের বিপক্ষে কঠোর সমালোচনা ও বক্তব্য রাখেন। আশা করি এবার সরকার গঠন করার পর পরই কঠোর হস্তে এ গুলো দমন করবেন এটুকু শুধুই আপনার কাছে বাংলার জনগনের আশা । আমরা আশা করি সফল ভাবেই আপনি এটা করতে পারবেন। আর যারা প্রতিভা নিয়ে জন্ম গ্রহন করেছেন এই পরিবেশ, এই সমাজ, এই কাল, এই সময় এই শাসন তাদেরকে নষ্ট করেছে। রাজনীতি যখন রাজনীতি বীদদের হাতে থাকে না, ব্যবসা যখন ব্যবসায়ীদের হাতে থাকে না, খেলা যখন খেলোয়ারদের হাতে থাকে না, সুন্দর লেখা যখন লেখকদের হাতে থাকে না, সুন্দর উপন্যাস যখন উপন্যাসিকদের হাতে থাকে না, সুন্দর কবিতা যখন কবিদের হাতে থাকে না, সুন্দর প্রশাসন যখন দক্ষ যোগ্য সৎ প্রশাসকদের হাতে থাকে না তখন বড় কোন সংস্কৃতি আশা করা যায় না। খেলোয়ার যখন, নায়ক যখন, নায়িকা যখন, মেধাহীন যখন, রাজনীতি যখন সমাজের আদর্শচ্যুত ব্যাক্তি যখন সর্বশেষ ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ শিক্ষক, অধ্যক্ষ, অধ্যাপক যখন, রাজনীতি বিদ ও বিশ^াসঘাতক ব্যবসায়ী যখন অর্থের পেছনে ছোটেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা যখন রাজনীতির ও অর্থনীতির চক্রে মহাব্যস্তÍ হয়ে ওঠেন কথন আপনি দেশ ও দেশের জন্য এবং এমন কি নিজের জন্য ও ভালো কোন ফল আশা করতে পারেন না। তাই আমার মনে হয় আমরা ধ্বংস ও নষ্টের মহা যাত্রা মঞ্চায়ন করতে যাচ্ছি। তাই আসুন বাংলার অভাগা জনগন যুদ্ধ ও লড়াই করে সমাজ থেকে দূর্বৃত্তায়নেয় সকল চক্রান্ত রুখে দেই। আবার ওা জেগে উঠি সুন্দর আগামী গড়ার লক্ষ্যে।

লেখক: জহিরুল ইসলাম শাহীন
সহঃ অধ্যাপক
বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ