HEADLINE
সাতক্ষীরার পর এবার মাগুরার সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ! কলারোয়ায় এক কৃষকের ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

অন্যের অধিকারে অন্যরা, আমার অধিকারে আমি

জহিরুল ইসলাম শাহিন / ৫৫২
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২

পবিত্র আল কোরআনে, ইসলাম ধর্মে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য মানব অধিকার সমান ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার কথা বর্ণিত আছে। নূন্যতম মৌলিক অধিকার গুলোর সমন¦য়ে সুন্দর, সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার যে অধিকার তাই হলো মানব অধিকার। একটি স্বাধীন ভূখন্ডে, সার্বভৌমত্বে সুন্দর ও সাবলীলভাবে নিজ জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলবে মানুষ এটাই অধিকার, এটাই স্বাভাবিক। একেবারে মোর্দ্য কথা হচ্ছে, আমাদের এ জগতে দেশে দেশে ও সময়ের বিবর্তনে মানুষের যে মৌলিক ও সর্বজনীন অধিকার স্বীকৃতি পেয়ে আসছে তাই হলো মানব অধিকার। একটি দেশে বিভিন্ন জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও গোত্রের মানুষের বাস থাকতে পারে, উঁচু নীচু যাই হোক না কেন সব মানুষেরই দেশের প্রতি একটা দেশত্ববোধ, মমত্ববোধ, ভালবাসা, দেশের প্রতি টান এবং বিশেষ করে বিশেষ একটি অধিকার থাকে, কিন্তু আধুনিক যুগে প্রতিযোগিতার যুগে, প্রযুক্তির যুগে, বিজ্ঞানের যুগে বা সভ্যতার যুগে দেখা যায় মানবাধিকার দিন দিন ব্যাপক ভাবে ভূলন্ঠিত হচ্ছে। প্রাচীন কাল থেকে বিশ্বে মানব সভ্যতা বিকাশের ভিতর দিয়ে ও যুদ্ধ মারামারি, হানাহানি হয়ে আসছে আবার বিশ্ব নেতারা একই টেবিলে বসে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করছে। জাতিতে জাতিতে, ধর্মে ধর্মে, গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত দাঙ্গা সংঘাত কম হয়নি, আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি পরাশক্তির দেশগুলোর মধ্যে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ বিগ্রহ শুরু হয় এবং পরিশেষে সেই যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করে এইভাবে পৃথিবীতে দুইবার বিশ্বযুদ্ধ হয় এবং এর ধ্বংসাতœক প্রভাব অনাকাংখিত ভাবে অনেক ছোট-ছোট দেশে ও ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের নাগাসাকি ও হিরোশিমাতে যে বোমার বিস্ফোড়ণ ঘটে এবং যে পরিমান ক্ষয়-ক্ষতি হয় তাহা হিসাব করা একে বারে অসম্ভব। এখন ও তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে অত্র এলাকায় বসবাসকারী অধিবাসীদের, এমন কি এ পর্যন্ত দুই টি বিশ্বযুদ্ধ ¯œায়ুযুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক দ্বন্দে অনেক লোক প্রান বিসর্জন দিয়েছেন। মানুষের অধিকার লঙ্ঘনের হাত থেকে পৃথিবীকে সুন্দর করার লক্ষ্যে মানুষে মানুষে শান্তি, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে তুলতে হবে, এবং সর্বোপরি সব মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যদি সব মানুষের সমান অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তবে সে অঞ্চলের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে। আজকের মধ্য প্রাচ্যের দেশ ফিলিস্তিনিতে যেভাবে নিরীহ মানুষের উপর বর্বরতা চলছে, যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে নির্বিচারে, যে জুলুম অত্যাচারের হাত থেকে দুধ খাওয়া শিশু এবং সাধারণত নারীরা ও বাদ যাচ্ছে না অথচ ইজরাইলের ইহুদী বসতী সরকারের অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ না করে বরং পশ্চিমা ও ইউরোপের দেশ গুলি তাদের কে অস্ত্র ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করছে। তাহলে মানবতা কোথায়? যে দেশে শিশুরা পর্যন্ত না খেয়ে, পুষ্টি গুণের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে তাদেরকে দেখার কেউ নেই। মানবাধিকার কি এক্ষেত্রে প্রশ্ন বিদ্ধ হবে না? পশ্চিম আফ্রিকান দেশ গুলোর মধ্যে কঙ্গো, লাইব্রেরি, সোমালিয়া, হারজেগোবনিয়া ইত্যাদি দেশে শিশুরা বা নারীরা না খেয়ে দিন অতিপাত করছে এবং অন্ধকার রাতে তাদের পাশে কেউ নেই। আবার ছোট ছোট দেশ গুলির মধ্যে যারা একটু উঠতি বা যদি কোনরকম মানচিত্রে দেশ গুলোর উপর থেকে আস্থা সরিয়ে নিলে হঠাৎ করে অর্থনৈতিক অবরোধ, বানিজ্যিক অবরোধ ভ্রমণ অবরোধ ইত্যাদি চাপিয়ে দেওয়া হয়। আফগানিস্তানকে, পাকিস্তানকে, সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক ইত্যাদি দেশের উপর সবসময় নিষেধাজ্ঞা জারী করা হচ্ছে, এই সমস্ত দেশের শাসন ব্যবস্থা, গণতন্ত্র বা সরকার গঠন স্বাধীন ভাবে করার কোন সুযোগ নেই। পশ্চিমারা যেভাবে বলবেন যেইভাবে করতে হবে। তাদের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে তাদের পরিকল্পনার বাইরে গেলে তাদের স্বার্থের বা উদ্দ্যেশের বাইরে গেলে সাথে সাথে এ্যাকশন, সাথে সাথে যুদ্ধ এবং সেই নির্যাতিত সরকারকে উৎখাত না করা পর্যন্ত তারা ক্ষান্ত হয় না। অথচ অর্থনীতি ধ্বংস হচ্ছে, দেশের প্রতি হুমকি আসছে কিন্তু তাদের পছন্দের সরকার গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে মানবতা বা মানবাধিকার কোথায় যাচ্ছে, তাহলে কি দাড়ালো, মানবাধিকারের সংঙ্গা পৃথিবীর বড় বড় দেশ গুলো যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে সেই ভাবে হবে। আজকের অযাচিত ভাবে অত্যন্ত অন্যায় ভাবে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে মুসলমানদের উপর, মুসলিম নেতাদের উপর ব্যস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার, রকেট এবং মিসাইল হামলা করা হচ্ছে এবং অর্থনীতিকে একেবারে পঙ্গু করে দিচ্ছে সেক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে না? আমরা যদি বর্তমানে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান ও ভয়ানক যুদ্ধের কথা বলি কিছু টা হলে ও গায়ের জোরে আইনের তোয়াক্কা না করে, জাতিসংঘকে অগ্রাহ্য করে একেবারে সারা পৃথিবীকে হুমকি দিয়ে, ইউক্রেনের অনেক গুলো প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়ান সেনারা। অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, এমন কি বসত বাড়ি পর্যন্ত ধ্বংস করে দিচ্ছে, সেখানকার হাজার হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। পৃথিবী একেবারে চুপচাপ ঠান্ডা মাথায় লড়াই দেখছে বড় বড় শক্তিধর দেশগুলো তারা আসলে কি ভাবছে ইউক্রেন ধ্বংস হয়ে যাক এবং রাশিয়ার সমরাস্ত্র ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হোক। ইউক্রেন ভাগ হয়ে যাক, এমনটি আমার মনে হয়েছে। মানুষে মানুষে মৃত্যুকামনা করা উচিত নয়। কারোর ধ্বংস চাওয়া উচিত নয়। যাতে সবাই স্বাধীন ভাবে বর্ণ গোত্র, জাতি নির্বিশেষে হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ রেখে শান্তিতে থাকা যায়, সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য শান্তির স্বর্গ তৈরী করা যায়। পারমানবিক অস্ত্র, রাসায়নিক অ¯,¿ মিসাইল, ব্যস্টিক বোমা ইত্যাদি একেবারে নিষিদ্ধ এবং কোনরকম ব্যবহার করা যাবে না জাতিসংঘে এমন আইনই পাস করা উচিত। পৃথিবীর সকল দেশের নেতাদের এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উন্নত দেশ গুলোকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে হবে মানুষ যাতে ধ্বংস না, ক্ষতিগ্রস্থ না, অধিকার ভূলন্ঠিত না হয়, সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে, সকলের ভিতরে, সমঝোতা, সম্প্রীতি, সহমর্মিতা, পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করা। এবং কোন ভাবেই যেন মানবাধিকার বা মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার ভূলন্ঠিত না হয়। শপথ করতে হবে কোন দেশ কখনও কোনভাবে বিপর্যায়ের মুখোমুখি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লে বা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমরা যেন সকলেই একসংগে ঝাপিয়ে পড়ে সকল ধরনের সমস্যা সমাধান করতে পারি। এক কথায় আসুন আমরা সবাই মিলে সুন্দর পৃথিবী একযোগে গড়ে তুলি, যেখানে থাকবে না কোন পরিবেশ দূষণের ভয়, থাকবে না কোন আগ্নেয় অস্ত্রের ভয়, শুধু থাকবে শান্তি আর শান্তি, চারদিকে বিশ্বশান্তি। ‘‘ অন্যের অধিকার অন্যের থাক আমার অধিকারে আমি,’’ এই মূল মন্ত্রে সবাই এগিয়ে চললে বিশ্বজগতের চারদিক শুধু শান্তি উঁকি দিবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

লেখকঃ জহিরুল ইসলাম শাহিন
সহকারি অধ্যাপক
বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ