HEADLINE
সাতক্ষীরার পর এবার মাগুরার সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ! কলারোয়ায় এক কৃষকের ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন

সততা জীবনকে আলোকিত করে

জহিরুল ইসলাম (শাহিন) / ১৫৯৭
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

সততা উৎকৃষ্ট পন্থা। সততাই শক্তি ও বল। সততা ছাড়া জীবনে কোন লক্ষ্য, উদ্দেশ্য বা গন্তব্যে পৌছানো যায় না। তাই মহাজ্ঞানী, মহাজন ও সব মনীষীরা বলে গেছেন, পৃথিবীতে যে দেশগুলি উন্নতির চরম শিখরে পৌছে গেছে এবং শিল্পে উন্নত দেশের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় তাদের পিছনে একটাই শক্তি তার নাম সততা। সততার বলেই বলিয়ান হয়ে সকল শ্রেণীর শক্তি অর্জন করা সম্ভব। সৎ মানুষকে সমাজে সকল শ্রেণীর মানুষ সম্মান ও শ্রদ্ধা করে এমনকি সমাজে যারা নিকৃষ্ট, ঘৃনিত এবং অসম্মানিত তারাও। সুতরাং সততা ছাড়া কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নহে। সততার চেয়ে পবিত্র, সততার মতো প্রবল শক্তি সততার মতো ধন পৃথিবীতে আর হতে পারে না। আল্লাহ তায়লা পবিত্র কোরআনেও সততা সম্পর্কে এরশাদ করেছেন এবং তিনি কখনও মিথ্যাবাদিকে পছন্দ করেন না। প্রকৃত মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানোর জন্য যে সব মানবীয় গুন একান্ত প্রয়োজন তার মধ্যে সততাই হচ্ছে সর্ব প্রধান। সত্যের ও আদর্শের আলোই আলোকিত গুনের নাম সত্যবাদিতা। তাই সততা, আদর্শ ও সত্যবাদিতা থেকে ভ্রষ্ট হলে অবস্যই একদিন বিনষ্ট হতে হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তাই মানব সংসারে এবং পৃথিবীতে অত্যন্ত ব্যক্তিবান, আদর্শবান এবং গুরুত্বপূর্ণ বা পরিপূর্ণ মানবে পরিনত হতে হলে নিজের চিন্তা চেতনায় ভাবনায়, কাজে, কর্মে জীবনে সকল ক্ষেত্রে সততার মর্যাদা রক্ষা করে চলতে হবে। সার্বিক দিক দিয়ে হিংসা, দ্বেষ, ক্লেষ, লোভ, লালসা, প্রতারণা, লোক ঠকানো, বেশি বাড়া-বাড়ী, অন্যের সাথে কাউকে গিবত করা ইত্যাদি সম্পূর্ণ রূপে ভূলে যেতে হবে। সকল শ্রেণীর মানুষকে ভালাবাসতে হবে। যে যে শ্রেণীর বা গোত্রের হইক না কেন অকপটে একে অপরের সাথে সব সময় সত্য কথা বলা এবং পারস্পারিক সাহায্য বা সহযোগিতায় এগিয়ে আসা, কখনও ঘৃনা না করা। সব সময় মানুষের ভালাবাসা পাইতে হলে সামাজিক ভাবে সকলের সাথে সত্য কথা বলতে হবে, কখনও মিথ্যা কথা বলা যাবে না। কাউকে অহেতুক ছোট করা যাবে না বা কোন ভাবেই আঘাত দেওয়া যাবে না। এই সমস্ত গুনাবলী যারা অর্জন করতে পারে না তারা সমাজের অত্যন্ত নিকৃষ্ট ব্যক্তি। সমাজ তাদের কে গ্রহন করতে পারে না। প্রকৃত অর্থে চরম মিথ্যাবাদী। থাকতে পারে তাদের অনেক অর্থ, সম্পদ, প্রাচুর্য, কিন্তু সমাজে মানুষের কাছে তারা নীতিহীন, আদর্শচ্যুত, স্বার্থপর এবং ব্যক্তিত্বহীন ব্যক্তি হিসাবে চিহ্নিত। তাদেরকে কেহ সম্মান করেনা। সুতরাং সব ধরনের অন্যায়, অপরাধ, পাপ, লোভ, লালসা পরিহার করে ন্যায় ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটিয়ে সত্যিকারের চরিত্রের বিকাশ ঘটাতে পারলেই নিজেকে একজন সৎ, আদর্শবান ও চরিত্রবান ব্যক্তি হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা যায় জীবনের সকল ক্ষেত্রে এ গুনটির মর্যাদা মানব হৃদয়ে অটুট রাখার মাধ্যমে এর প্রকৃত স্বরূপ তুলে ধরা যায়। সত্যকে অবলম্বন করে যে বৈশিষ্ট্য বিকশিত হয তার নাম আদর্শ। সত্য সত্যই এর মধ্যে কোন গোপনীয়তা থাকে না। একে মাটি চাপা দিয়ে রাখা যায় না। একদিন না একদিন বের হবেই। মিথ্যার ক্ষেত্রেও ঐ একই। মিথ্যাকে কিছুক্ষন ধামা চাপা দিয়ে রাখা যায়, মিথা আজ হোক আর কাল হোক তা বেরিয়ে আসবেই তাতে কোন সন্দেহ নাই। হয়তো বা কিছুক্ষনের জন্য মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। মিথ্যা দ্বারা প্রতারনা করে বা কোন লালসার বশীভূত হয়ে সত্যের উপর বা প্রকৃত ভালবাসার উপর আঘাত করলে প্রকৃতি ও সেই আঘাত ঐ অপরাধীর উপর প্রতিষ্ঠিত করবে এতে কোন সন্দেহ নেই। এটাই পৃথিবীর নিয়ম। সুতরাং কাউকে আঘাত করবেন না। আঘাত করলে পাল্টা আঘাত ও আপনার উপর আসতে পারে। এটা ঠেকানোর কোন পথ আপনার সামনে খোলা নেই। সুতরাং একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় সত্যের মধ্যে মহান আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়। সত্যকে, সত্যবাদিতা কে, আদর্শকে ধরে যে মানব, যে সমাজ, যে জাতি নিজেদের সংগ্রাম সাধনাকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে, সে নিত্যকে লাভ করেছে। তার ধ্বংস নেই, তার ক্ষয় নেই, তার পাপ নেই, তার অকল্যান নেই, সে শ্বাসত আলোকময় জীবন পেয়েছে। যে সমাজে ত্যাগ, কল্যান, মানব জীবনের আদর্শ কে পবিত্র ও নিষ্কলঙ্ক করার চেষ্টা হয়েছে, সে সমাজ বিলুপ্ত হয়নি, ধ্বংস হয়নি বরং সে সমাজ সত্যের আলোই আলোকিত হয়ে সারা বিশ্বের চতুর্দিকে বিচ্ছৃরিত হয়ে যায়। মিথ্যার কুজ্ঝটিকা অপসারিত করে সত্যের সূর্যালোক লাভ করা অতটা সহজ নয়। এর জন্য নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে হয়, পরম সহিঞ্চুতা ও ধৈর্য্যরে পরিচয় দিতে হয়। কঠোর অধ্যাবসায় করতে হয়। জগতের সাথে সমাজের সাথে মানুষের সাথে খাপ খাইয়ে চলার জন্য অত্যন্ত সাধনা প্রয়োজন। মিথ্যার মনোহর মুর্তি আমাদের চারদিকে অসংখ্য ইন্দ্রজাল বিস্তার করে আছে। যে মহামন্ত্র বলে ইন্দ্রজালের কুহক ভেঙে আমরা সত্যের পথ অনুসরন করতে পারবো তা হলো ভক্তি ও বিশ্বাস। জগতে দেখা গেছে যারা অত্যাধিক খোদা ভক্ত সামাজিক সেবা দিয়ে আসছে, সৎ নিয়ত নিয়ে বিভিন্ন কর্ম কাজ সম্পাদন করছে তারাই সত্য প্রিয় ব্যক্তি। এবং যে ব্যক্তির নিজের উপর অগাধ বিশ্বাস আছে সেই সত্যকে লাভ করেছে এবং মানুষের অসংখ্য ভালবাসা, সম্মান পেয়েছ। চিন্তা ও কল্পনাকে সৃষ্টি কর্তার আসন প্রান্তে নিত্য প্রতিষ্ঠিত রাখায় আপনাকে জগতের ক্ষুদ্র লাভ ক্ষতির বহু উর্দ্ধে তুলে ধরে যে ব্যক্তি সংসার ক্ষেত্রে সদর্পে বিচরন করতে পারেন তিনিই কেবল আদর্শ বা সত্যকে লাভ করতে পারেন। জগত সংসারে এ সত্যের পথ অতি বন্ধুর, অতি কন্টকময়, একটু সুযোগ পেলেই স্বার্থের তাগিদে সব কিছু ভূলে যায়। এ দূর্গম পথে নিউয়ে যে অগ্রসর হতে পেরেছে সেই সৃষ্টিকর্তাকে জয় করেছে। সত্যকে উপলব্ধি করতে পেরেছে। কঠোর সাধনা ছাড়া সত্যের পথকে জয় করা যায় না বা জয়ী হওয়া যায় না। জীবনকে সৌন্দর্য, সুখময়, বিকশিত আর শান্তিময় সমৃদ্ধ করতে সত্যের কোন বিকল্প নেই। সততার অন্তহীন সাধনায় জীবনে স্বার্থকতা এনে দিতে পারে। যুগে যুগে মহা জ্ঞানীরা, মহা পুরুষেরা সত্যের অনুসরণে তাদের জীবনের মহান সাধনাকে সফল করেছেন। সততার জন্য যেমন তারা লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়েছেন তেমনি সততার বলে বলিয়ান হয়ে তারা প্রবল ও ঘোরতর শত্রæকে ও পরাজিত করে নিজেদের প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করেছেন। তাদের সামনের সব বাধা সত্যের জোরে জয় করা হয়েছে। শত দুঃখ কষ্টের ভিতর দিয়েও যদি সত্যকে বুকে ধারন করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়, জয় সুনিশ্চিত এবং কষ্টার্জিত জয়ই জীবনকে আলাদা ভাবে আলোকিত করার প্রয়াস যোগায়। সততাই একমাত্র পথ যার মাধ্যমে আমরা আমাদের চরিত্রের রূপ পরিবর্তন করে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হতে পারি। প্রবাদে আছে, চরিত্র অমূল্য সম্পদ। চরিত্র টাকা দিয়ে কোন যায় না, সুন্দর চরিত্র গঠন করা যায় শুধুমাত্র সততার গুনে। নিজের লোভী মন অপরের ক্ষতি সাধনে তৎপর হয়। তখন সত্যের অমর্যাদা হয়। মিথ্যার ছলনায় মানুষ নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে দেয়। আপাত দৃষ্টিতে মিথ্যার জয় প্রতীয়মান হলেও তা স্থায়ী হয় না। বরং সত্যের প্রকাশ একসময় অনিবার্য হয়ে উঠে। এবং সত্যের বিজয় ঘোষিত হয় পরিনামে লোভ লারসায় নিজ স্বার্থে এবং মিথ্যায় বশীভূত হয়ে এবং সত্যকে বিচ্যুত করে পৃথিবীতে কেহ কখনও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত দেখা যায় না। সত্য বিশ্বাসীরা পরম ধৈর্য্যরে সাথে সত্যের অনসরন করে এবং পরিনামে জয় লাভ করে। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে সমাজকে, নিজের পরিবারকে, দেশকে গড়ে তোলার জন্য নিজের জীবন থেকে, মন থেকে, হৃদয় থেকে সকল ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড, অন্যায়, অনিয়ম, ব্যভিচার, মোনাফেকী, মিথ্যাচার, প্রতারনা, কাউকে ঠকানো সব কিছু ভূলে যেয়ে, নিজেদের আদর্শ, সত্যবাদিতা, সততা, ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করে সমাজকে, দেশকে জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

লেখকঃ জহিরুল ইসলাম (শাহিন)
সহঃ অধ্যাঃ ইংরেজী
বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ