সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহের তারিখ এগিয়ে আনায় শুরুতেই বাজারে আমের সরবরাহ গত বারের তুলনায় কয়েক গুন বৃদ্ধি। জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে আম পাড়ার তৃতীয় দিনেই দাম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষী ও ব্যবসায়িরা।
রবিবার (৭ মে) বাজারে সব ধরনের আমের দাম ছিল গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। পাইকারি বাজারে আমের এই দাম অব্যহত থাকলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন আমচাষী ও ব্যবসায়িরা।
মৌসুমের শুরুতেই আমের দাম কম থাকার কারণ হিসাবে সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজারের আড়তদাররা জানান, জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক ঘোষিত আম পঞ্জিকা অনুযায়ি গোবন্দিভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাস সহ স্থানীয় জাতের আম সংগ্রহের দিন ছিল ১২ মে। যে কারণে চাষীরা বাগানের আম পাড়তে পারেনি। কিন্তু হঠাৎ করে ওই তারিখ এগিয়ে ৫ মে করায় প্রথম দিনেই বাজারে আমের সরবরাহ বেড়ে গেছে। যে কারণে শহরের সুলতানপুর বড় বাজারের আড়তগুলোয় চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি উঠেছে। ফলে হঠাৎ করে সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণেই আমের দরপতন হয়েছে।
আম ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন,দাম বেশি পাওয়ার আসায় গতকাল মৌসুমের প্রথম দিন আড়তে ৬০ মণ আম নিয়ে আসেন। কিন্তু জেলার বড়বাজারে এসেই হতাশ হয়েছেন আমের দাম দেখে। গত মৌসুমের প্রথম দিকে এই বড়বাজারের আড়তে গোবিন্দভোগ আম বিক্রি করেছিলেন মণ প্রতি ২ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে। গতকাল একই বাজারে গোবিন্দভোগ বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে। বোম্বাই ও গোলাপখাস আমও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি করেছেন।
বাগান ক্রয়, পরিচর্যা, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মণ গোবিন্দভোগ আম উৎপাদন খরচ পড়েছে কমপক্ষে ২ হাজার টাকার উপরে। সেখানে বাজারে প্রতি মণ আম বিক্রি হয়েছে দেড় হাজার থেকে ১৮ শ’টাকা দরে। ফলে বাজারে এমন দাম গেলে আটটি বাগানে তার কয়েক লক্ষ টাকা লোকসান হবে।
সাতক্ষীরা বড়বাজারের আম বিক্রিকারক আড়তদার মেসার্স মর্জিনা ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম জানান, বাজারের সব আড়তে আমে সয়লাব হয়ে গেছে। একদিনেই কয়েক হাজার মণ আম উঠেছে সুলতানপুর বড় বাজারের আড়তে। যে কারণে ভালো দাম পাচ্ছেন না চাষী বা ব্যবসায়িরা। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় সব ধরনের আম গত দুই দিনে অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে আড়তগুলোয়।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,
জেলায় অন্তত ১৫-১৬ জাতের আম উৎপাদন হয়, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এবার আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে যাবে আশা করা যচ্ছে।