HEADLINE
সাতক্ষীরার পর এবার মাগুরার সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ! কলারোয়ায় এক কৃষকের ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১২ অপরাহ্ন

যশোরের কেশবপুরে কোটি কোটি টাকার সোলার স্ট্রিট লাইট নষ্ট!

উৎপল দে, কেশবপুর / ৫৭১
প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২


যশোরের কেশবপুরে কোটি কোটি টাকার সোলার স্ট্রিট লাইট নষ্ট হচ্ছে। সন্ধ্যার সাথে সাথে ফাঁকা মাঠের ভিতর মাইকেল রোড দিয়ে চলাচল করার সময় চৌরাস্তা মোড়ে আসতেই অন্ধকারে গা ঝিমঝিম করত। আবার সোনাতোলা নামক মাঠের ভিতর দিয়ে রাস্তায় রাতের অন্ধকারে চোর ডাকাতের ভয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ত। কেশবপুর উপজেলার এমন অনেক রাস্তাঘাট ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ধাপে ধাপে স্ট্রিট লাইট স্থাপনের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করে রাতের অন্ধকারে মানুষের নির্বিঘœ চলাচল নিশ্চিত করেছিলো গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) এবং গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ(টিআর) কর্মসূচি। যে কারণে স্বস্তি ও নিরাপদে রাতের আঁধারে চলাচল করতে পারত এই জনপদের মানুষ। অনেক সময় দূর্যোগের কারণে বিদ্যুৎ না থাকাতে গ্রামের ভিতরে দেখা যেত ছেলে মেয়েরা এই সোলার স্ট্রিট লাইটের নিচে বসে পড়াশুনা করেছে। সন্ধ্যার সাথে সাথেই সক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠত লাইট গুলো। আবার ভোরে সূর্যের আলোতে নিভে যেত।


দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতাধীণ ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছর থেকে শুরু হওয়া এই ধারাবাহিক প্রকল্প হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে কাবিখার ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ৫৬০ টাকা খরচে ১৪৯ টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। এই অর্থ বছরে টিআর এর ৮ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪০ টাকা খরচে ১১ টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। যেখানে প্রতিটা লাইটে গড়ে খরচ হয় ৭৯ হাজার ৫৫০ টাকা ৬২ পয়সা। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে কাবিখার ১ কোটি ৫৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা খরচে ২০০ টি এবং টি,আর এর ১ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪০ টাকা খরচে ১৮৬ টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। এ অর্থ বছরে সর্ব উচ্চ সংখ্যক লাইট বসানো হয়। যার গড়ে প্রতিটা লাইটে খরচ হয় ৭৭ হাজার ১৪০ টাকা। সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে কাবিখার ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫ হাজার ২২০ টাকা খরচে ১৭৩ টি এবং টি,আর এর ১ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ টাকা খরচে ১৭১ টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করে কেশবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। যেখানে গড়ে প্রতিটা লাইটে খরচ দেখানো হয় ৭৭ হাজার ১৪০ টাকা। কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৩ অর্থ বছরে ৬ কোটি ৯০ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকা খরচে মোট ৮৯০ টি সোলার স্ট্রিট লাইট বসানো হয়। বর্তমান সময়ে এই সোলার স্ট্রিট লাইটগুলো অধিকাংশ নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণ বা পরবর্তীতে মেরামতের জন্য কোনো ফান্ড না থাকার কারণে অনেকের নজরে আসছে না বিষয়টি। যে কারণে জনদূর্ভোগ বেড়েছে। এক সময় অন্ধকার দূর করতে আলোকিত উপজেলা গড়তে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এখন যেন আবার গোটা উপজেলাব্যাপী আলোর পরে অন্ধকার নেমে এসেছে। উল্লেখ্য, এই সব গুলো লাইট বসানোর কাজ করে ঊঢচঊজঞ জঊঘডঊঅইওখ ঊঘঊজএণ ্ ঊঘএওঘঊঊজওঘএ খঞউ শ্যামলী, ঢাকা নামক কোম্পানী। প্রতি অর্থ বছরে বরাদ্ধকৃত স্ট্রিট লাইটের জন্য ৩ বছর মেয়াদী কোম্পানী কর্তৃক মেরামত করার কথা ছিলো।


দেখা যায়, উপজেলার মজিদপুর এতিমখানার সামনে মেইন রোডের পাশে বসানো লাইটটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে ২টি লাইটের মধ্যে ১টি নষ্ট। আবু চেয়ারম্যানের কবরের সামনে রাস্তার পাশে ১টি ও বাগদাহ মহিউস সুন্নাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসার সামনে ১ টি লাইটের ব্যাটারি, সোলার প্যানেল চুরি হয়ে গেছে। দেউলি বাজারের ২ টি লাইটের মধ্যে ১টি, প্রতাপপুর বাজারের ৪ টির মধ্যে ১টি, হাসানপুর বাজারের পুরাতন কৃষি ব্যাংকের সামনে ১টি, সুফলাকাটি ইউনিয়নের ফেসবুক মোড়ে ৩টি, সাগরদাঁড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ১টি, সাগরদাঁড়ী কপোতাক্ষ নদীর দুই পাড়ে ৬টি, ত্রিমোহনি-বাঁশবাড়িয়া সোনাতোলা মাঠে ৫টি, ঝিকরা গনির মোড়ে ১ টি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। জিয়েলতলা বাজারের ২টি নষ্ট হওয়ার পর বাজার কমিটি থেকে মেরামত করেছে। এমন অনেক জায়গায় লাইট নষ্টের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ সব এলাকার মানুষ জানান, দীর্ঘদিন লাইট গুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। চোরে ব্যাটারি, সোলার প্যানেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।


এক্সপার্ট গ্রুপের ফাউন্ডার এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর এনএইচ রিমন সাংকাদিকদের বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ৩ বছর মেয়াদ শেষ হওয়া লাইটগুলো আবেদনের মাধ্যমে পিআইও অফিসকে জানিয়ে দিয়েছি। যে গুলোর মেয়াদ আছে অফিস সেগুলো মেরামতের জন্য বললে আমরা মেরামত করে দিবো।


কেশবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শুভাগত বিশ্বাস বলেন, লাইট গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সোলার প্যানেলের উপরে ময়লা পড়ার কারণে। অনেক সময় ছায়াযুক্ত স্থানে লাইট বসানোর কারণে ব্যাটারিতে চার্জ উঠছে না। প্রকল্পটি দ্রæত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হয়েছিলো। যার কারণে চেয়ারম্যান, মেম্বররা যে যে স্থানের লিস্ট পাঠিয়েছিলো সেখানে সেখানে বসানো হয়েছে। পরবর্তীতে স্ট্রিট সোলার লাইটের জন্য কোনো বরাদ্ধ আসেনি। ফলে আমাদের কিছু করার নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ