HEADLINE
সাতক্ষীরার পর এবার মাগুরার সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ! কলারোয়ায় এক কৃষকের ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

বেনাপোল কাস্টম হাউসে রাজস্ব ঘাটতি ২০০০ কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক / ৬৩৬
প্রকাশের সময় : শনিবার, ৩ জুলাই, ২০২১

২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরের কাস্টম হাউসে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে দুই হাজার ১৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বছরটিতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে মাত্র চার হাজার ১০০ কোটি টাকা।

তবে রাজস্ব আয়ে এমন ধস নামলেও কাস্টম কর্তৃপক্ষ বলছে, আগের বছরের চেয়ে এ বছর রাজস্ব আয়ের ঊর্ধ্বমুখী অনেক বেশি।

এর আগেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছিল তিন হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি ১১৪৫ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮-তে ঘাটতি ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেশি আদায় হয়েছিল ৪৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

আবার ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘাটতি ২০৩ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ঘাটতি ৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ঘাটতি ১৩৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, ২০১২-১৩-তে ঘাটতি ৪৫২ কোটি ৮৯ লাখ এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৯৪ কোটি টাকা।

এছাড়া অনিয়ম, শুল্ক ফাঁকি ও অব্যবস্থাপনায় অনেক ব্যবসায়ী এ বন্দর ছেড়ে চলে যাওয়ায় গত ৭-৮ বছর ধরে এ কাস্টম হাউসে রাজস্ব ঘাটতি হয়ে আসছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

আমদানিকারক পিয়াস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বেনাপোল বন্দর থেকে সরকার প্রতিবছর প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করে থাকে। তবে বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক নয়। আমদানিকারকদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে বন্দরে পণ্য পাহারা দিতে হয়। বন্দর থেকে পণ্য চুরি, বারবার রহস্যজনকভাবে অগ্নিকাণ্ডে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করেছেন। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে মাদক প্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় ঝামেলা এড়াতে ভদ্র ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরে চলে গেছেন। এসব কারণে পর পর ৮ থেকে ৯ বছর ধরে এ বন্দরে আমদানি পণ্য থেকে কাস্টম কর্তৃপক্ষ চাহিদা মত রাজস্ব আহরণ করতে পারছেন না।

যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, বেনাপোল কাস্টমে আমদানি পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষণের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেই। এতে খুলনা ও ঢাকা থেকে পরীক্ষা করাতে মাসের অধিক সময় লেগে যায়। ফলে যেমন প্রচুর সময় অপচয় হয় তেমনি বন্দরে আটকে থাকা পণ্যে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। বেনাপোল কাস্টম হাউসে বিএসটিআই ও বিএসআইরের শাখা স্থাপনের দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে অনেক ব্যবসায়ী এ বন্দর ছেড়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে রাজস্ব আয় কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটিও একটি বড় কারণ বলে মন্তব্য করেন এ ব্যবসায়ী।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, গেল দুই বছর করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা ভারতে যেতে না পেরে চাহিদা মত পণ্য আমদানি করতে পারেননি। এতে রাজস্ব আয় ব্যাহত হয়েছে। তবে বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে যে সকল অবকাঠামো বেনাপোল বন্দর ও কাস্টম হাউজে থাকার কথা তা অনেকটা নেই। এতে লোকসানের কবলে পড়ে অনেকে এ পথে বাণিজ্য বন্ধ করেছেন। এটাও বেনাপোল বন্দরে কয়েক বছর ধরে রাজস্ব ঘাটতির কারণ।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পণ্যগারের জন্য জমি অধিগ্রহণ, নতুন পণ্যগার নির্মাণ ও বন্দর এলাকায় রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এছাড়া বন্দরে আরও জমি অধিগ্রহণ ও পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলমান বলেও জানান তিনি।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, রাজস্ব আয়ের পরিমাণ কমলেও রাজস্ব আহরণের ঊর্ধ্বমুখী ছিল বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর রাজস্ব বেশি আদায় হয়েছে ১ হাজার ৫১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া দেশে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে করোনার প্রভাব চলছে। করোনা সংক্রমণ রোধে কয়েক মাস বেনাপোল-পেট্রোপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।

তিনি বলেন, করোনার মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও উচ্চ শুল্কহারের পণ্য কম এসেছে। তবে তারা ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়ানোর পক্ষে কাজ করছেন। যারা অনিয়ম করার চেষ্টা করেছেন তাদের জরিমানা, লাইসেন্স বাতিলসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এরই মধ্যে বন্দর কর্তৃপকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানান বেনাপোল কাস্টমসের এই কর্মকর্তা।

বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বেড়ে যাবে। এবং এ বন্দর দিয়ে রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ