HEADLINE
সাতক্ষীরার পর এবার মাগুরার সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ! কলারোয়ায় এক কৃষকের ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন

শিক্ষকদের দেখার তাহলে কেউই নেই?

জহিরুল ইসলাম শাহীন / ৬৪২
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ মে, ২০২৩

জহিরুল ইসলাম শাহীন: এটা কেমন হলো, এটা কেমন বিষয়। আমরা হতবাক, বিহবল, এ কেমন দেশ। ভাবতেও অবাক লাগছে শিক্ষকদের কদর নেই পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই। শুধুমাত্র আমাদের দেশেই সম্মান বা শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয় না। শুধু আমরা না পৃথিবীর সব মানুষ জানে, শিক্ষকরা দেশ গড়ার কারিগর, জাতির মেরুদন্ড, জাতির সম্পদ, জাতির বিবেক, তারা জ্ঞান দেয়, জ্ঞান আরোহন করে, উপদেশ দেয়, দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে, রাষ্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে কৌশল তৈরী করে তারা আজ রাজপথে নামবে, এ কেমন, এটা কখনও ভাবা যায় না। জাতির জন্য অত্যন্ত কলংকিত বিষয়। সম্মিলিত শিক্ষকরা একত্রে মিলে হয়তো রাস্তার ওপর কোন গাছ তলার নিচে বা অন্য কোন স্থানে বসে তাদের নায্য দাবি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যায় সঙ্গত ভাবে সংগ্রাম বা আন্দোলন করে সেখানে নাকি পুলিশ হামলা চালায়, লাঠি পেঠা করা হয়। এ আবার কেমন পুলিশ তোমাদের হাতটা মোটেও কাপলো না বা কাপে না, তোমরা কাদের গায়ে হাত তুলেছো একটা বারও কি ভেবেছো আমরা কাদের কাছ থেকে লেখাপড়া শিখেছি, কাদের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করেছি, কাদের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে, উপদেশ নিয়ে আজকের সরকারের তথা দেশের খেদমত করার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছি। তোমাদের একটা বারও হাত কাপলো না। যারা আজ মহান পেশায় নিয়োজিত থেকে দেশকে সেবা দিচ্ছে যাদের কৃপায় আজ তোমরা সচিব, ম্যাজিষ্ট্রেট, ইউ এন ও, ডিসি, এমপি, ওসি, এস আই সহ বিভিন্ন ক্যাডারে বড় বড় অফিসার হয়ে দেশ পরিচালনা করছো। তারাতো কেউ না কেউ তোমাদের স্যার, সম্মানীয় শিক্ষা গুরু। তাদের দোয়া নিয়ে আজ তোমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মন্ত্রী, এমপি, হয়েছো না তোমরা ভিন দেশের কোন গ্রহ নক্ষত্র থেকে জন্ম নিয়ে একেবারে বিদ্যা অর্জন করে জিনের পিঠে চড়ে বাংলাদেশের মাটিতে পড়েছো এবং রাতারাতি বড় বড় অফিসার হয়েছো এবং স্বপ্ন দেখেছো যে শিক্ষকদের বিনা কারনে বেধড়ক পেঠাতে হবে। তাদের অসম্মান করতে হবে। তাদের অশ্রদ্ধা করতে হবে। তাদের কাছ থেকে আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নেব বিনিময়ে শিক্ষকরা ভূতের বেগার দিবে কোন বেতন বা মাইনে দেব না। একবারও কি তোমরা ভেবে দেখেছো একজন শিক্ষক কিভাবে তার সংসার চালায়, কিভাবে তার দিন কাটে। কিভাবে সামান্য লতা পাতা খেয়ে শাক সবজি খেয়ে তাদের দিন অতিবাহিত করতে হয়। তোমরা কিছুই জানো না। কোন দিন তা জানার চেষ্টাও করো না। কারন তোমরা তো সবাই গদিতে বসে বেতনের বাইরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছো, ঘুষ নিচ্ছো, বানিজ্য করছো, রাজধানী শহরসহ বড় বড় শহর গুলোতে আলিশান বাড়ী বানাচ্ছো। নিজেদের সন্তানদের লেখাপড়া করানোর জন্য বিশেষ প্রাইভেট কারের ব্যবস্থা করছো। বাড়ীতে প্রাইভেট টিউটর রাখছো। কত না বিলাশবহুল ভাবে সন্তান নিয়ে আলিশন ফ্ল্যাটে বসবাস করছো। অপর দিকে যে মহান শিক্ষায় ব্রত তোমাদের শিক্ষক যার কাছে তুমি স্বপ্নে অ, আ, ই, ঈ এবং ইংরেজিতে এ, বি, সি, ডি এবং গনিতের নামতা শিখেছিলে তাদের অবস্থাটা এখন কেমন তোমাদের ভেতর সরকারের মন্ত্রানালয়ের মুখ্য সচিব সহ একজন সচিব কি নেই, এদেশে একজন ডিসি কি নেই, এদেশে একজন এস,পি,কি নেই, একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি কি নেই, একজন আমলা কি নেই, একজন ব্যবসায়ী কি নেই, একজন সমাজ সচেতন ব্যাক্তি কি নেই, জাতীয় সংসদেও একজন সংসদ সদস্য কি নেই, একজন মন্ত্রী কি নেই, যে শিক্ষকদের ভাগ্য ও নির্মম পরিহাসের কথা জানে না, তারা দুবেলা দুুমুটো ভাত পায় না তাদের সন্তানদের লেখা পড়া করানোর সুযোগ পায় না অর্থাভাবে। আমাদের এই স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশে একজন শিক্ষক কি সাচ্ছন্দে বসবাস করার অধিকার রাখে না। তোমরা প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সকালের বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ দেখ, তাই না। চোখে কি পড়ে না অর্থ কষ্টে অনেক শিক্ষক বিষপান করে, গলায় ফাঁস লাগিয়ে অনেক সময় হার্ট ফেল করে মারা যাচ্ছে। এমনকি স্ত্রীর সাথে অনেক শিক্ষকের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটছে। টাকা না দিতে পারার কারনে সন্তান বাবাকে মারধর করছে। এটাতো প্রায় প্রতি দিনের ঘটনা। তোমাদের চোখে কি পড়ে না। তোমাদের বোধ শক্তির উদায় হয় না। যাদের কাছ থেকে এতটা লেখাপড়া শিখে আসলাম তাদের অবস্থা এ কি? তোমাদের উচিত না শিক্ষকদের পক্ষ হয়ে শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অংশ গ্রহন করা, একাত্বতা প্রকাশ করা এবং মাননীয় সরকারের প্রধানের কাছে একটু অনুরোধ করা। শিক্ষকদের পরিশ্রম খাটনি এবং তাদের পারিশ্রমিক সম্পর্কে জানলে তোমাদের অনেক কষ্ট হবে। এটা কি আদৌ সম্ভব শিক্ষকদের এত কম টাকা বেতন কোন ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। একজন বেসরকারী হাইস্কুলের শিক্ষক এর বেতন মাত্র ১২০০০/- টাকা দিয়ে শুরু হয়। যদি বি,এড করা হয় তখন সে ১৬০০০/- টাকা বেতন পায় । এরপর সিনিয়র শিক্ষক হতে পারলে ২২০০০/- টাকা পর্যন্ত বেতন হয়। আর এখান থেকে ১৫/২০ বছর আগে মেডিকেল বাবদ বা চিকিৎসা ভাতা বাবদ মাত্র ৫০০ টাকা এবং বাড়ী ভাড়া বাবদ পায় মাত্র ১০০০ টাকা। এই টাকা থেকে সরকার আবার প্রতি মাসে ১০% করে টাকা কর্তন করেন অবসর ও কল্যান ট্রাষ্টের জন্য। তাহলে এ থেকে ভাল ভাবে বোঝা যায় যে এ দেশে একজন শিক্ষক কি নিদারুন জ¦ালা যন্ত্রনার ভেতর এবং অভাব অনাটনের ভেতর দিয়ে বসবাস করতে হয়। কোন ভাবে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে কোন দ্রব্য কেনা এ মুহূর্তে একজন শিক্ষক এর পক্ষে সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে দেখা যায় অবসরে শিক্ষকদের ভ্যানগাড়ী চালাতে, পার্টটাইমে অন্যের দোকানে কাজ করতে, গৃহস্থের ঘরে দিন মজুরীর কাজ করতেও। তাই আমি মনে করি আজ তোমাদের নৈতিক দায়িত্ব একটা স্বাধীন দেশে শিক্ষকদের মর্যাদা দেওয়া তাদের মান দেওয়া, তাদের সম্মান দেওয়া তাদের পারিবারিক এবং আর্থিক বিষয়টার দিকে একটু নজর দেওয়া। কারন এমন কোন গ্রাম বা অঞ্চল নেই যেখানে শিক্ষক খুজে পাওয়া যায় না। সুতরাং বর্তমান সমাজে তোমাদের নৈতিক দায়িত্ব শিক্ষকদের সম্পর্কে খোজ খবর নেওয়া। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যেখানে শিক্ষকদের উপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে পেটানো হয়। ঘাড় ধাক্কা দিয়ে রাস্তা থেকে বের করে দেওয়া হয়। নজিরবিহীন ঘটনা পৃথিবীর সকল দেশে শিক্ষকদের আলাদা ভাবে সম্মান মর্যাদা দেওয়া হয়। পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে যান, নেপালে যান, গনচীনে যান, পকিস্তানে যান, গিয়ে দেখেন সে দেশের জনগন কিভাবে শিক্ষকদের সম্মান করে। মনে রাখা উচিত এখনও দেশের প্রায় ৯৪ ভাগ স্কুল কলেজ বেসরকারী। এতক্ষন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের আর্থিক অবস্থার কথাই বললাম, বেসরকারী কলেজের শিক্ষকদের অবস্থা আরও করুন ও মর্মান্তিক। তারা তো ইংরেজি, গনিত, পদাথর্, রসায়ন, জীব বিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান এই সাবজেক্ট গুলোর বাইরে অন্য কোন সাবজেক্ট এ প্রাইভেট পড়াতে পারে না বা কোন শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়েনা। কলেজের শিক্ষকদের কাছে এখন আসলে কোন প্রাইভেট নেই। খুবই সীমিত কারন হাজার হাজার বেকার ছেলে মেয়েরা মাষ্টার্স কমপ্লিট করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছেলে মেয়েদের কোচিং করিয়ে কিছুটা উপকৃত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতির বিবেক, জাতির প্রতিষ্ঠাতা ও অভিভাবক তিনি শিক্ষকদের আর্থিক বিষয় গুলোর উপর ব্যাপক খোজখবর নিতেন এবং শিক্ষকদের খুব সম্মান ও মর্যাদা দিতেন। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরন করার আগেই একজন বিপথগামী সৈন্য নিষ্ঠুর আক্রমন নির্মম হত্যাকান্ড ঘটিয়ে তাকে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিতে হলো। এই ট্রাজেডী শিক্ষক সমাজ এখন ও ভুলতে পারে না। আজ যদি এই মহান ব্যক্তি যাকে আমরা হিমালায় পর্বতের সাথে তুলনা করি যদি বেচে থাকতেন হয়তো আজকের শিক্ষকদের অতটা অর্থকষ্ট ভোগ করতে হতো না। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মত সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয মহাবিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা গুলো সরকারি করতেন কিংবা এমন একটা ব্যবস্থা করতেন যেখানে শিক্ষকরা সোনার বাংলায় হাসিমুখো অন্যদের মতো বাবা-মা, সন্তানও স্ত্রী এবং ভাইবোন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারতেন। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দিপু মনি, আপনি যখন শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্বে আসলেন তখন এদেশের শিক্ষক সমাজ আনন্দে আহলাদে পুলকিত হয়ে উঠলেন। এবার বুঝি ভাগ্যের চাকা ঘুরবে কারন আপনার মতো ক্লিন রাজনীতিবিদ, ক্লিন ইমেজের মানুষ এবং বিশেষ করে শিক্ষা সম্পর্কে সবচেয়ে ভাল ধারনা এবং এদেশের শিক্ষকদের মনের কথা আপনিই বোঝেন। তাই আমরা ভেবেছিলাম আমাদের আর আন্দোলন করা লাগবে না, আমদের কথা, আমাদের ভাষা, আমাদের কষ্ট, আমাদের অভাব সব কিছুই আপনিই ভাল বুঝবেন। কিন্তু বিধি বাম আপনার সময়ে শিক্ষকরা একে বাবে কিছুই পায় নি বা পাবে না এমটি ভাবাও খুব কষ্টকর। বরং দেখলাম, অনেক বেশী আন্দোলন করতে হয়েছে, অনেক বেশী মার খেতে হয়েছে, অনেক বেশী নির্যাতিত হতে হয়েছে, অনেক বেশী শিক্ষকদের অস্মানিত হতে হয়েছে, সমাজে বেশী শিক্ষকরা অবহেলিত হয়েছে। কিন্তু আপনি এখনও পর্যন্ত শিক্ষকদের জন্য কিছুই করলেন না। অনেকেই আশা করেছিল এবার হয়তো ঈদে বোনাস, বৈশাখী ভাতা এমনকি স্কেলেও কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। কারন আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি উনি শিক্ষকদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রী হয়ে ও শিক্ষকদের কোন দাবির প্রতি একাত¦তা ঘোষনা করেন নি বা ওয়াদা করেননি যে একটা কিছু আমি করে দেখাবো নতুবা পদত্যাগ দেব। একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা একটা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে একজন শিক্ষককে জাতীয় সংগীত গাইতে বলেছিলেন। উনি ঐ প্রতিষ্ঠানের গেম টিচার উনি সুন্দরভাবে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করলেন। কিন্তু উনি কবিতা আকারে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করতে বললেন। আসলে জাতীয় সংগীত জাতীয় সংগীতই। এটা কি কবিতা কখনও হতে পারে? আামি মনে করি জাতীয় সংগীত কে হেয় করা হয়েছে জাতীয় সংগীতের নাম কবিতা হবে কেন? কোথাও কি কবিতা বলে লেখা আছে। যে কবিতা হিসেবে পড়তে হবে। জাতীয় সংগীত হেয় করা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি বরং কি হলো ঐ শিক্ষকের ওপর আরেক চাপ প্রয়োগ করা হলো। তার নাকি এমপিও বন্দ রাখা হয়েছে। মাননীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রীকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে জোর অনুরোধ করছি। আমরা ভেবেছিলাম মনে, করেছিলাম গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া গনতন্ত্রের রুপকার, মানবতার মা, সকল মানুষের স্বপ্ন পূরনের কান্ডারী, বাংলাদেশের বারবার নির্বাচিত প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উনি শিক্ষা বান্ধব, শিক্ষার্থী বান্ধব, শিক্ষক বান্ধব এবং পরিবেশ বান্ধব একজন নেত্রী ওনার শাসনামলে শিক্ষকদের মানবেতর জীবন কাটাতে হবে, ধারদেনা করে চলতে হবে, সুদে টাকা নিতে হবে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে, এমনকি শিক্ষকদের না খেয়ে থাকতে হবে, আতœহত্যার পথ বেছে নিতে হবে, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হবে, এমনটা এদেশের শিক্ষক সমাজ কখনও আসা করে নি। শুধু শিক্ষকরাই নন সমাজের কেহ কোন দিন ভাবেনি যে শিক্ষকদের শনির দশা ভোগ করতে হবে। তিনি এমন একজন প্রধানমন্ত্রী সব সময় শিক্ষাকদের কথা স্মরন করেন, শিক্ষাকদের মর্যাদা দেন, শিক্ষকদের সম্মান করেন। আমি বলতে শুনেছি তার মুুখে শিক্ষকরাই হচ্ছেন এ দেশের প্রান, এদেশের সম্মান। তাদের হাত দিয়েই বেরিয়ে আসে হাজার হাজার সন্তান, যারা একদিন এ দেশের হাল ধরবে, নেতৃত্ব দিবে, ডাক্তার হবে, প্রফেসর হবে, শিক্ষক হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে এবং প্রশাসানিক কর্মকর্তা হবে সুতরাং শ্ক্ষিকদের পেটে যদি ভাত না যায়, সুষ্ঠ ভাবে চলতে না পারে, সারাক্ষন অভাবে থাকে তাহলে কিভাবে তারা সন্তান দের মানুষ করবে। সুতারাং তাদের দিকে লক্ষ্য দেওয়া দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার মত একজন ঘুুষ, দুর্নীতিমুক্ত, আপষহীন প্রধান মন্ত্রী, একজন স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, একজন দেশ প্রেমিক নেত্রী, একজন অগ্নিমূর্তি ধারনকারী প্রধান মন্ত্রী, যিনি কখনও কারোর কাছে মাথা নত করেন না, কখন ও বিদেশীদের কাছে বিক্রি হন না । অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্র কন্ঠে কথা বলেন, স¦প্ন পূরনের কথা বলেন। তার শাসনামলে শিক্ষকরা এত অসহায়ত্ব বোধ করবেন এমনটা কখনও আমরা ভাবিনি। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আপনি হয়তো জানেন না একজন বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বা মাদ্রাসা বা কলেজের শিক্ষকের মাসিক বেতন কতটা কম বা কতটা নি¤œ পর্যায়ের। বাসা ভাড়া ১০০০/- চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা নববর্ষ ভাতা ২০% এবং বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পান ২৫%। এই হচ্ছে মোট আয় এর থেকে আপনার শিক্ষা মন্ত্রালয় প্রতি মাসে ১০% কর্তন করে নেয় অবসর ভাতা ও কল্যান ট্রাষ্টের জন্য। তাহলে আর কয় টাকাই বা থাকে যে দেশে এক কেজি চাউলের দাম ৭০ টাকা, গরুর মাংসের দাম ৭৫০ এবং ১ কেজি খাসির মাংসের দাম ১০০০ টাকা। নাভিশ^াস দম বেরিয়ে যাবার মত অবস্থা হয় একজন বেসরকারি শিক্ষকের। উচ্চ শিক্ষা লাভ করে এমন মহান পেশায় আমরা আসি আমার ধারনা হয়তো আপনি এদেশের শিক্ষকদের বেতনের কথা, এদের মনের অবস্থা, এদের কষ্টের কথা, এদের অভাবের কথা আপনি জানেন না অথবা আপনাকে জানতে দেওয়া হয় নাই। স্বাধীনতার ম্যানুয়ালে ছিলো প্রত্যেকটা মানুষের অধিকার সমান ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু দেখেন একজন পুলিশের সাধারন সদস্য, একজন বিজিবির সাধারন সদস্য, একজন সেনা বাহিনীর সাধারন সদস্য একজন আনসার বাহিনীর সাধারন সদস্য কম লেখাপড়া জানা সত্বে ও রাজকীয় ভাবে জীবন যাপন করছেন। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকদের কথা একটু ভাবুন। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে সব চাইতে বড় বড় ডিগ্রী নিয়ে তারা একটু সম্মান ও মর্যাদা পাবার জন্য শিক্ষকতা করার মত পেশা বেছে নেয়। তাই আপনার মত দক্ষ, যোগ্য, নির্ভিক, অত্যন্ত সাহসী প্রধান মন্ত্রী থাকতে গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে ভেজানো রাজ পথে অধিকার আদায়ের জন্যে নামবে এবং পুলিশের লাঠিপেটা খাবে এমনটি আমরা কখনও ভাবি নি। আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। এদেশ গড়ার জন্য, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য, শিক্ষকদের স্বপ্ন পূরনের জন্য, শিক্ষকদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য, যা যা করা দরকার তাই করবেন। এদেশের শিক্ষকরা আপনার মুখের দিকে চেয়ে আছে। কখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদের শতভাগ বোনাস উৎসব ভাতা এবং সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গুলো জাতীয়করন করে দেবেন। অধীর আশা ও আগ্রহ নিয়ে শিক্ষকরা আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন এবং তারা মনে করে আগামী কোরবানী ঈদ আসার আগে আমাদের সুযোগ্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব দাবী পূরন করে দেবেন তাঁর অতি সাহসী নেতৃত্বে। আপনার মনে আছে কিনা জানি না কাজী ফারুক, শেখ আমানুল্লাহ নেতৃত্বে শিক্ষক ফেডারেশন সব সময় আপনাকেই সমর্থন জানিয়েছিলেন এবং এখনও সেটা থাকবে বলে মনে করি আপনার সুস্বাস্থ ও দীর্ঘায়ু কামন করি।

লেখক: জহিরুল ইসলাম শাহীন
সহঃ অধ্যাপক
বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ