প্রধানমন্ত্রীকে গুলি করে হত্যার হুমকী মামলাসহ ৬মামলার আসামী বহিস্কৃত পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদ হাসান বাবলু কর্তৃক সরকার দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষদের মারপিট, হয়রানিসহ প্রাণনাশের হুমকী দেওয়ায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের নিকট মাহমুদ হাসানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে এ অভিযোগটি দায়ের করা হয়। অভিযুক্ত মাহমুদ হাসান বাবলু ধুলিহর ইউনিয়নের বড়দল গ্রামের নওশের আলীর ছেলে।
অভিযোগ পত্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৯শে জুন বিকালে বড়দল এলাকার মুদি ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বড়দল গ্রামের নওশের আলীর ছেলে ও তৎকালিন পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদ হাসান বাবলু। ওইসময় ক্ষমতার বড়াই দেখিয়ে উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন ‘যদি কখনো প্রধানমন্ত্রীর ডিউটি পাই তাহলে সেদিন-ই প্রধানমন্ত্রীকে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করবেন।’ এঘটনায় বড়দল ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিন সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন (মামলা নং ৫৯/১৩)। এমামলায় দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিলেন বাবলু এবং ২০১৪সালের ৩১শে আগস্ট সাতক্ষীরা ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ী’র উপ-পুলিশ পরিদর্শক লুৎফর রহমান ‘মাহমুদ হাসানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকী দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে’ মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল থেকে স্থায়ীভাবে সাসপেন্ড করা হয় তাকে। তবে চাকরী হারানোর পরেও বিভিন্ন সময় নিজেকে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার নিকট আত্বীয় পরিচয়ে ধুলিহর ইউনিয়নের সরকার দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে জিম্মিকরে নানাভাবে হয়রানী করতো মাহমুদ। আর এসংক্রান্ত কারনে ২০২০ সালের ১৯শে মে পর্নোগ্রাফি আইনে (মামলা নং: ৫/২০), একই দিন স্ত্রী হত্যা চেষ্টার অভিযোগে (মামলা নং: ৬/২০), ২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল মংস্য ঘের দখল ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে (মামলা নং: ৩৩/২১), ৯শে জুন কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে (মামলা নং: ৫৭/২১), ৮’ই আগস্ট ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করার অভিযোগে মাহমুদ হাসানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নং: ২৩/২১)। এছাড়াও ২০২১ সালের ১২’ই নভেম্বর বড়দল গ্রামের আলহাজ্ব কুদ্দুস কারিগরকে মারপিট, ১৩’ই নভেম্বর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আ’লীগ ভাংচুরসহ আ’লীগ কর্মী তরিকুল ইসলামকে মারপিট, ২২শে নভেম্বর বড়দল গ্রামের রেজাউল ইসলাম কে মারপিট, ৩০শে নভেম্বর কবির ইসলামকে মারপিটসহ চলতি বছরের ১৯শে ফেব্রুয়ারী পিন্টু মল্লিককে মারপিটের অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বহিস্কৃত এই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বলে অভিযোগ পত্রে জানানো হয়।
এব্যাপারে সরকারদলীয় নেতাকর্মীসহ স্থানীয়রা বলেন, ‘এতোগুলাে মামলা থাকার পরেও মাহমুদ হাসান বাবলু প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এবং সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মারপিট, হুমকি-ধামকি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরকরাসহ আওয়ামীলীগ কার্যালয় ভাংচুর করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছেন। তার তান্ডবে আমরা বর্তমানে অসহায় হয়ে পড়েছি। একারনে আমরা বহিস্কৃত পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদ হাসান বাবলুর হাত থেকে রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের নিকট একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছি। আশাকরি তদন্তপূর্বক তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’