HEADLINE
সাতক্ষীরায় ১৫টি যানবাহন ও ৬টি মুদি দোকানে জরিমানা সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় পাতানো নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন দক্ষিণ ফিংড়িতে “শিশু যৌন নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে তারুণ্য” শীর্ষক পথনাটক সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্থিতিশীলতার দিকে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ যুবলীগের অঙ্গীকার আসাদুজ্জামান বাবু এমপি হলে সকল মানুষ পাবে উপকার সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভারতীয় নাগরিক নিহত, আহত ১ সাতক্ষীরায় গলায় ফাঁ’স দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহ’ত্যা কলারোয়ায় শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে ইট ভাঙা গাড়ি উল্টে চালকের মৃ’ত্যু বাবুলিয়ায় বি.বি ইটভাটা ধ্বংস, এস.বি.এল ইটভাটাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা
বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২২ অপরাহ্ন

ভূয়া এতিম দেখিয়ে বছরের পর বছর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ!

স্টাফ রিপোর্টার / ২৯৯
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২

ভূয়া এতিম দেখিয়ে বছরের পর বছর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার তালা সদরের আল ফারুক শিশু সদন এতিমখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, আল ফারুক শিশু সদন মাদ্রাসায় কোন এতিম নেই। সরকারি খাতায় ৩৬ জনের নাম থাকলেও বাস্তবে রয়েছে মাত্র ৫ জন শিশু। এই পাঁচজনের প্রত্যের বাবা-মা আছেন বলেও স্বীকার করেছে শিশুরা। এদিকে সমাজসেবা অফিস থেকে প্রতি ছয় মাস পর পর ৩৬ জন এতিমের ক্যাপিটেশন উত্তোলন করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সমাজসেবা অধিদপ্তরের বক্তব্য অনুযায়ী ইতিপূর্বে বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার শোকজ করা হয়েছে। গত তিন বছরে সবমিলিয়ে ১২ লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে গিয়ে পাঁচজন বাচ্চা পাওয়া গেলেও কর্তৃপক্ষের দাবি সেখানে ৩৬ জন এতিম রয়েছে। তবে এই ৩৬ জন এতিম বাচ্চা কোথায় রয়েছে সেটার সঠিক জবাব দিতে পারেনি তারা।

স্থানীয় কাজী জীবন বারী জানান, এতিমখানা শুরু থেকে খেয়াল করেছি এখানে কোন এতিম নেই। এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ক্যাপিটেশনের টাকা নেওয়ার জন্য নামে মাত্র পাঁচ জন ভূয়া এতিম দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে শোকজ করেছিল তাদেরকে। এখানে গণমাধ্যম কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের লোকজন পরিদর্শন করতে গেলে পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসা থেকে বাচ্চাদের ভাড়া করে নিয়ে আসে।

সাবেক সভাপতি মগবুল হোসেন জানান, দুই বছর দায়িত্বে ছিলাম ঠিকঠাক মত দায়িত্ব পালন করেছি। সে সময়ে ৩৬ জন এতিম ছিল। বর্তমান অবস্থা জানা নেই। সরকারি ক্যাপিটেশন টাকা মোট ৫ বার উত্তোলন করেছি। সব মিলিয়ে সাড়ে ৯ লাখ টাকার মত উত্তোলন করেছেন তিনি। ভুয়া এতিম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চারিদিকে এতিম সংকট থাকায় এভাবে চলতে হয়। প্রতিষ্ঠান তো চালু রাখতে হবে তাই এতিম না থাকলেও প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানের মত থেকে যাবে।

বর্তমান সভাপতি খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ছয় মাস হলো ক্ষমতায় এসেছি। আগে এখানে কি হয়েছে জানিনা। তবে বর্তমানে ৩৬ জন এতিম রয়েছে এখানে। তাদের নিয়মিত খেতে দেওয়া হয়। তাছাড়া সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। সরকারি ক্যাপিটেশনের একবারে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছি আর আগামী ডিসেম্বর মাসে একবার উত্তোলন করব। সরকার থেকে প্রতি ছয় মাস অন্তর দুই লাখ চল্লিশ হাজার টাকা দেওয়া হয় এই সামান্য টাকায় এতগুলো এতিমকে খাওয়ানোসহ অন্যান্য খরচ বহন করা কষ্টকর।

সরেমজিনে যেয়ে পাঁচ জন এতিম পেলে তখন তিনি বলেন, অন্যরা পড়তে গেছে বিভিন্ন মাদ্রাসায়। তারা আসে আবার যায়, এভাবে চলে।

ভূয়া এতিম দেখিয়ে অর্থ আত্নাসাৎ করার বিষয়ে তিনি বলেন, এতিম না থাকলে কোথায় পাবো? আপনি এতিম দিতে পারলে দেন।

তালা সমাজ সেবা অফিসার সুমনা শারমিন জানান, কিছুদিন আগে এতিমখানা কতৃপক্ষকে শোকোজ করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বারবার নজরদারি করা হচ্ছে। বাস্তবে সেখানে ৫ জন বাচ্ছা থাকলেও তারা খাতা কলমে ভূয়া এতিম দেখিয়ে সরকারি টাকা উত্তোলন করেন তারা। তিনি আরও জানান, দীর্ঘ বছর যাবৎ এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত ক্যাপিটেশনের টাকা কাগজ-কলমে ভূয়া এতিম দেখিয়ে তারা উত্তোলন করে আসছে। বাস্তবে পরিদর্শন করতে গেলে পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসা থেকে বাচ্চাদের খেতে দেওয়ার কথা বলে তাদের ডেকে নিয়ে আসে। এভাবেই চলছে তাদের কার্যক্রম।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, বাস্তবে এতিম পাওয়া খুব কষ্টকর তাই যাদের মা কিংবা বাবা অন্যতরে বিবাহ করেছে সে সকল বাচ্চাদের এখানে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলা সকল ইউপি চেয়ারম্যান কে বলা হয়েছে তাদের সহ এলাকায় এতিম থাকলে এই মাদ্রাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ