HEADLINE
কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষা’ঙ্গ কে’টে দ্বিতীয় স্ত্রী’র আ’ত্ম’হ’ত্যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন : বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ৫ দিন পর ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু দেবহাটায় পাল্টাপাল্টি মারপিটে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত ৫ সাতক্ষীরা সীমান্তে নয়টি স্বর্ণের বার’সহ চোরাকারবারি আটক সাতক্ষীরায় চেতনানাশক স্প্রে করে দুই পরিবারের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট আশাশুনির কোপাত বাহিনীর প্রধান কারাগারে সজিনা গাছের ডাল কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে একজনের মৃত্যু কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় পলাতক আসামি যশোরে গ্রেপ্তার
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন

সাতক্ষীরাতে বিশ্ববিদ্যালয় অতীব জরুরী

জহিরুল ইসলাম (শাহিন) / ৭৭২
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের শেষ সীমানায় অতি পরিচিত ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সন্নিবেশিত খুলনা জেলার পশ্চিম পাড়ে এবং দক্ষিণ প্রান্তে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম প্রান্তে ভারতের পশ্চিম বাংলা সীমান্তে, সাবেক রাষ্টপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হুসেইন মো: এরশাদ এর শাসনামলে ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা হিসাবে আতœ প্রকাশ করেছিল। তখন থেকে সাতক্ষীরা জেলা সকল জনগনের কাছে জেলা হিসাবে অত্যান্ত গর্বের এবং অহংকারের। এর পিছনে নানা বিধ কারন রয়েছে। এই জেলার দক্ষিন অঞ্চলে নোনা পানির বিভিন্ন নদনদী, হাওর বাওর এবং ঘের রয়েছে যার মধ্যে অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ চাষ করা হয় এবং সাতক্ষীরা জেলায় বাহিরে প্রতিটি জেলায় প্রতিদিন পিকআপ, ভ্যান, ট্রাক এবং বিভিন্ন যানবহনের মাধ্যমে রপ্তানি করা হয়। মাছ গুলির মধ্যে চিংড়ী মাছ, বাগদা, গলদা, হরিনা, ভেটকি, মাগুর, ট্যাংরা, পাকাল ইত্যাদি। উপরোক্ত সুস্বাদু ও দামী মাছ দেশের উত্তর পশ্চিম উত্তর মধ্য ও উত্তর পূর্ব অঞ্চলে এবং এমনকি ঢাকা শহরে তেমন পর্যাপ্ত পাওয়া যায়। উক্ত মাছ ঐ সমস্ত এলাকার জনগনের কাছে প্রিয়। এই মাছ বিভিন্ন সময়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে, সমস্ত ইউরোপ জুড়ে এবং আমেরিকাতে অত্যন্ত জনপ্রিয়। মাছে ভাতে বাঙালি একথা সত্য। আমি দেখেছি সিলেট রংপুর, বগুড়া, জয়পুর হাট, পঞ্চগড়, জামালপুর নেত্রকোনা, ঢাকা, রাজশাহী ইত্যাদি অঞ্চল থেকে যারা আমাদের সাতক্ষীরাতে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ভ্রমনে আসেন বা এই সাতক্ষীরা জেলাতে যারা চাকুরী করতে আসেন তারা সাতক্ষীরা থেকে বিদায় নেওয়ার সময় সাতক্ষীরা থেকে বিভিন্ন ধরনে সুস্বাধু মাছ কিনে যান। শুধু তাই নয় সুন্দর বনের মধূ অর্থাৎ সাতক্ষীরার মধূ দেশ বিখ্যাত। সাতক্ষীরার কাকড়া মাছ ও দেশ বিখ্যাত যাহা প্রতি নিয়ত ইউরোপ ও আমেরির বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। সুন্দর বনের সুন্দরী কাঠ, গজারী কাঠও দেশ বিখ্যাত কারণ এই কাঠ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফার্ণিচার তৈরী করা হয়, যে ফার্ণিচার গুলি অত্যন্ত মজবুত ও টেকসই। সাতক্ষীরা জেলা আরও নানা ভাবে ঐতিহ্যবাহী ও প্রসিদ্ধ। সাতক্ষীরাতে প্রচুর পরিমান ফল উৎপাদন হয়। তার ভিতরে বিশেষ করে আ¤্রপালী, ন্যাংড়া, গোপাল ভোগ, কাচা মিঠা এবং বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু কুল বা বরুই। পানের বরচ এবং ধান ও পাট অর্থকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম প্রধান। সাতক্ষীরার বিভিন্ন অটো রাইচ মিলের মাধ্যমে আতপ চাউল, সিদ্ধ চাউল, ২৮ ও ৬৩ চাউল উৎপাদন করা হয় যাহা প্রত্যেকদিন সাতক্ষীরা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। সুদুর সিলেট সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, শেরপুর পঞ্চগড় এমন কি দেশের পূর্ব উত্তর অঞ্চল চট্রগ্রাম, ঝালকাঠি, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুর পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়। এক বাক্যে, এক কথায় আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশের জন্য দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরা গর্ব ও অহংকার। এই জেলায় সব এলাকার লোকজন একবার হলে ও ভ্রমন করতে চায় কারন ভ্রমন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পর্যটন এলাকা গড়ে উঠেছে। আরও একটি কারন রাসায়নিক ফরমালিন মুক্ত, বিষাক্ত দ্রব্য মুক্ত অত্যন্ত টাটকা সতেজ মাছ, মাংস, শাক সবজি দিয়ে তারা বিভিন্ন হোটেলে তাদের আহার মেটাতে পারেন। সাতক্ষীরার খাবারের হোটেল গুলি অত্যন্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং খাবারের পর আবার প্যাকেট করে পরিবারের সদস্যদের জন্য নিয়ে যেতে দেখা যায়। সরকারে রাজস্ব আয় আমাদের এই সাতক্ষীরা জেলাতে অনেক বেশী বলে আমি মনেকরি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় অত্যন্ত দু:খের বিষয় এবং এমন কি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও যে জেলাটি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার দিক থেকে, অর্থনৈতিক দিকদিয়ে, সামাজিক দিক দিয়ে, পরিবেশ সংরক্ষণ এর দিক দিয়ে, রাজনৈতিক দিক দিয়ে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির দিকে এতটা এগিয়ে, ঠিক শিক্ষার দিক দিয়ে ততটা পিছিয়ে সাতক্ষীরা শিক্ষা দীক্ষার দিক দিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। অত্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকায় অর্থাৎ বঙ্গাপসাগর সংশ্লিষ্ট হওয়ায় এই এলাকা থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য রাজধানী শহর ঢাকা সহ, চট্রগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট ও খুলনা অঞ্চলে যেয়ে গরীব পরিবারের একজন মেধাবী ছাত্র ছাত্রীর পক্ষে একে বারে অসম্ভব কোন ভাবেই সম্ভব না। ৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে জয় লাভের পর থেকে কোন সরকার বা সরকারের কোন মন্ত্রী বা শীর্ষ নেতৃত্ব স্থানীয় কোন নেতা এই সাতক্ষীরাতে সাতক্ষীরার মেধাবী সন্তানদের উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করার জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দুর দুরান্তে গমনের জন্য কোন বিমান ঘাটি নির্মান করতে হবে এমন কোন পরিকল্পনা নিতে আমরা দেখিনি। এটা অত্যন্ত লজ্জার। তবে একটু আনন্দের বিষয় যে আমরা গর্ব করে বলতে পারি বর্তমান সরকারের মাননীয় সাংসদ ও সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী জনাব আ,ফ,ম রুহুল হক সাহেব বাংলাদেশের হাতে গোনা বিশিষ্ট ডাক্তারদের মধ্যে অন্যতম একজন প্রধান যিনি সাতক্ষীরাতে চিকিৎসা শান্ত্রের যে ব্যাপক অভাব অনুধাবন করতে পেরে একটি সরকারী মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন যাহা সাতক্ষীরার কলারোয়া অঞ্চল থেকে শুরু করে অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুন্দরবন পর্যন্ত মুমূর্ষ রোগীদের সেবাদানে একধাপ এগিয়ে দিয়েছেন। সাতক্ষীরা সদরে অবস্থিত সরকারী হাসপাতালটি ও তিনি অনেকটা আধুনিকীকরন করেছেন। নলতাতে ও একটি মেডিক্যাল ইন্সটিটিউট গড়ে তুলেছেন যেখানে আজ হাজার হাজার মানুষ সেবা পাইতেছে। আজ যদি সাতক্ষীরাতে সরকারী মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠাত না হইতো বা কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত না হইত বা সরকারী হাসপাতাল (সাতক্ষীরার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত) যদি তার আসন সংখ্যা না বাড়ানো হইত ২০২০ ও ২০২১ সালের কোভিড -১৯, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের কপালে কি জুটতো তাহা আপনারাই ভাল জানেন। আমরা সাতক্ষীরা জেলার সকল জনগন জনাব সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আ,ফ,ম রুহুল হকের প্রতি চিরকৃতঙ্গতা প্রকাশ করছি। সাতক্ষীরার প্রতি আপনার আলাদা একটি দরদ বা ভালবাসা আছে বলে সাতক্ষীরার জনগন মনে করেন। আপনি দীর্ঘজীবি হোন শুধূ এই টুকুই কামনা করি। আর একজন সাবেক মন্ত্রী ১৯৮০ দশকের দিকে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যেখানে আমাদের সাতক্ষীরা জেলার অসংখ্যা লোক চাকরী পেয়ে তাদের সন্তান দের মুখে হাসিফুটাতে পেরেছিলেন। কিন্তু এখন ঐ টেক্সটাইলমিল টা কিছুটা ধ্বংসের দিকে। তেমনটা চালু আছে বলে মনে হয় না। শিল্পখাতে সাতক্ষীরা কে উন্নতি করতে হবে। শিল্পে উন্নত সাতক্ষীরা আমরা দেখতে চাই। আর একটা বিষয় অত্যন্ত লক্ষনীয় বর্তমান সরকারের বর্তমান প্রধান মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা তিনি সাতক্ষীরার অগ্রগতির কথা, সাতক্ষীরার মানুষের মনের কথা, সাতক্ষীরার অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা হয়তো মনে রেখেছেন বা সাতক্ষীরার মানুষে যে যোগাযোগের দিক থেকে যে অনেক পিছিয়ে আছে তা তিনি বুঝতে পেরেছেন বিধায় তিনি বেনাপোল থেকে সাতক্ষীররা শেষ সীমান্ত মুসীগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন নির্মানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং একই সাতক্ষীরার মানুষের মনের কথা ও কিছুটা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বুঝতে পেরে সুদুর যশোর থেকে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা পর্যন্ত ছয় লেনের মহাসড়কের বাজেট ও ঘোষনা করেছেন। আপনাকে সাধুবাদ জানাই। আপনি এগিয়ে যান, আমরা আপনার উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের সাথে আছি। আমরা সব সময় আপনার পাশে থাকবো আর সমান্য কিছু দাবি টুকুই পুরন হলে সাতক্ষীরার মানুষের স্বপ্ন পূরন হবে। শুধুমাত্র উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এটা সময়ের দাবি, এই দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। আপনি শুনে খুশি হবেন অন্যন্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা দিক্ষায় অনেক টা এগিয়ে। প্রতি বছর এস,এস,সি, এইচ,এস,সি এবং উচ্চতর ডিগ্রির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে, মেডিকেল কলেজ গুলিতে এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ব্যাপক হারে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে এবং মেধা তালিকায় তারা উত্তীর্ন হচ্ছে। তাই আমাদের প্রাণের দাবি বড় বড় নদী, খাল, বিল, বনজঙ্গল পাড়ি দিয়ে সুদূর সুন্দরবন এলাকা থেকে, শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ থেকে, আশাশুনি কালিগঞ্জ ও তালার দক্ষিণ এলাকা থেকে অনেক দূর ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট যেয়ে লেখা পড়া করা সম্ভব হচ্ছে না। মেধা থাকা সত্বেও অভাবের কারনে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে দরিদ্র পিতা মাতার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই আজ আমাদের প্রাণের দাবি মাননীয় চার জন গুনি যোগ্য দক্ষ ও প্রভাবশালী সাংসদের কাছে, জাতীয় সংসদে আমাদের প্রাণের সাতক্ষীরাতে যেকোন মূল্যে একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিল আকারে এবং আপনাদের বক্তৃতায় এবং আলোচনায় আমাদের দাবি উঠে আসবে বলে আমরা মনে করি। অতি অল্প সময়ের ভিতরে সাতক্ষীরাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবে, সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা পড়ার ব্যাপক সুযোগ পাবে। তারা উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে বড় বড় ডাক্তার হয়ে এবং ইঞ্জিনিয়ার হয়ে সাতক্ষীরার জনগনের সেবা দিতে পারবে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আমাদের ডাকে সাড়া দেবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমরা সবাই ভাল থাকি আগামিতে সুন্দর সাতক্ষীরা গড়ি এই প্রত্যাশা করি।

লেখকঃ জহিরুল ইসলাম (শাহিন)
সহঃ অধ্যাঃ ইংরেজী
বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ