গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেতনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, নিত্যপ্রয়োনীয় বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে হাঁটু পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিবন্দী হয়ে দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের ওয়ারিয়া, পাথরঘাটা, হাজিপুর, হাচিমপুর, রাজবাড়ী ও ঝাউডাঙ্গার ঘোষপাড়াসহ পাশ্ববর্তী বল্লী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এসব এলাকার প্রায় অর্ধশত পুকুর-ঘের ভেড়ি ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ। নেই যথাযথ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানি ও বেতনানদীর উপচে পড়া পানি ঢুকে বাজারের চারপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পরিষদের পেছন দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতেও পানি কানায় কানায় পরিপূর্ণ। নাম মাত্র পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলেও নদীর পানি উল্টো চাপ দিচ্ছে। ফলে পরিষদ চত্ত্বরে ও বাজারের অধিকাংশ নিচু এলাকায় জমে আছে প্রায় হাঁটু পানি। ব্যবসায়ীদের জীবনযাপন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। পরিষদের পাশে গড়ে উঠা দোকানপাট ব্যবসায়ীরা খুলতে পারছে না। এছাড়া পরিষদের সামনে ও পাশেই গড়ে উঠেছে ঝাউডাঙ্গার কাঁচা বাজার। পুরো কাঁচাবাজার, মাছবাজার, মাংস পট্টি, কাপুড়িয়া পট্টি পানিবন্দী। আরো পরিষদের পাশে আছে মসজিদ ও মন্দির। পুরো বাজারটির অবস্থা শোচনীয়। বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হয়েছে দুর্গন্ধ আর নোংরা পরিবেশ।
স্থানীয় কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সাত্তার বলেন, গত দু’দিন ধরে অল্প অল্প করে পানি বৃদ্ধি হতে হতে আজ পুরো বাজারটি পানিতে ডুবে আছে। এ কারনে হাঁটে বসতে পারছি না।আরেক কাঁচামাল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতার কারনে আমরা হাঁটে বসতে পারছিনা। জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে মেইন রাস্তার পাশে কাঁচামাল গুলো নিয়ে বসেছি। আমরা দিন আনি দিন খাই। টানা বৃষ্টিতে আমাদের ব্যবসাও প্রায় বন্ধ। মৃৎশিল্পী ও ব্যবসায়ী স্বপন পাল বলেন, ৪০ বছর ধরে আমার নিজের হাতে মাটির বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরী করে এ বাজারে বিক্রি করছি। কিন্তু কয়েকদিন যাবত চারপাশ পানিবন্দী হয়ে থাকায় কোনো ক্রেতা আসেনা। এবিষয়ে পরিষদের কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেও পরিষদের সামনে পানি জমে থাকে। পানি নিষ্কাসনের নেই কোন সুব্যবস্থা। বিগত দিনে বেতনা নদী খননের কাজে ব্যাপক দূর্নীতি হয়। ঐ সময় নদীর দুপাশে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ না করে কোন রকমে লোক দেখানো নদী খননের কাজ করা হয়। নদীর দুই পাশে অবৈধ দোকান পাট, বসত বাড়ি নির্মাণ ও অপরিকল্পিত ঘের ভেড়ীবাধেঁর ফলে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা নেই। ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) আব্দুল বারী বলেন, গত কয়েকদিন যাবত হাঁটু পানি পেরিয়ে অফিস করতে হয়। অফিসের ভিতরে পানি ওঠার উপক্রম। সেই সাথে ভোগান্তিতে পড়ছে এখানে সেবা নিতে আসা মানুষ গুলো। এদিকে কচুরিপানায় পরিপূর্ণ হয়ে আছে পুরো নদী, পর্যাপ্ত জোয়ার-ভাটা না থাকায় প্রতিনিয়ত এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। এঅবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসি।