সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা সরকারি গোরস্থানের কাছে ভ‚মিহীন আব্দুর রহমান গত ৪ বছর ধরে ক্ষুধা ও রোগ যন্ত্রনায় কাতর হয়ে কেঁদে ফিরছেন। খাবার যোগাড়ের উপায় না থাকা এবং ঔষধ কেনার সংস্থানের অভাবে ক্ষুধা ও রোগযন্ত্রণায় নিতান্ত অসহায় হয়ে পড়েছে রহমান।
জানাগেছে, আঃ রহমান প্রতিবন্ধী ছিলনা। ঢাকায় ছোটখাট চাকরি নিয়ে যে আয় হতো তাতে বিধবা মাকে নিয়ে তাদের ভাল ভাবেই চলতো। কিন্তু “দুঃখ যার নিত্য সঙ্গী তার কপালে সুখ বেশীদিন সহেনা” এমন বচন সত্যি সত্যি রহমানের জীবনে বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে। পিতার আশ্রয়ে আগলে থাকার সুযোগ তার ভাগ্যে জোটেনি। বিধবা মাকে নিয়ে তাই কষ্টে কেটেছে তার ছোটবেলা। বড় হয়ে মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর অদম্য ইচ্ছা ও আকাঙ্খা বুকে ধারণ করে রহমান ঢাকায় গিয়েছিল কাজের সন্ধানে। পেযেছিল একটা ছোট্ট কাজ। বেশ ভালই কাটছিল তাদের। কিন্তু না সুখ তার কপালে বেশিদিন রইলনা। দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে যাকিছু আয় করেছিল তা সবই চিকিৎসার পিছনে শেষ হয়ে গেল। টাকা শেষ হয়ে গেলেও তার দুঃখ ছিলনা, তাকে পথে বসিয়েছে দুর্ঘটনার কারণে তাকে প্রতিবন্ধী হয়ে চিরদিনের মত অক্ষম হয়ে পড়া। চার চারটি বছর রহমান বিছানায় শুয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সংসার খরচ, চিকিৎসা খরচ যোগানোর কোন উপায় নেই তাদের।
তাই এখন অসুস্থতা আর ক্ষুধার যন্ত্রণা তাদেরকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। ক্ষুধার জ্বালার পাশাপাশি নিজেকে খুবই কষ্টকর পরিস্থিতির মুখে দিন যাপন করতে হচ্ছে। প্রস্রাব করাতে হয় নলের সাহায্যে। ৪টা বছর এভাবেই চলছে তার জীবন। এখন যন্ত্রণাদায়ক কারণ হয়ে তার সঙ্গী হয়ে রয়েছে, টয়লেট করা। টয়লেটের কোন মানুষকে দু’টি পা দিয়ে তার পেটের উপরে দাঁড়িয়ে চাপ দিলে তার টয়লেট হয়! এ যন্ত্রণা কেউ কখনো দেখেছেন কিনা তা আমাদের জানানেই।
অসহায় রহমানের মাতা জানান, ১৭ বছর বিধবা হয়ে দিনযাপন করছেন তারা। না আসে জমি, না আছে তাদের জন্য বসবাসের ঘর। কিন্তু তারপরও তিনি কোন ভাতার কার্ড পায়নি। পুত্র আব্দুর রহমান ৪ বছর প্রতিবন্ধী অবস্থায় মৃত্যুর মুখে করুন আকুতি শুনিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সেও পাইনি কোন ভাতার কার্ড। অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাইলে ০১৮৭৭৪৩৫১১৮ মোবাইলে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানান হয়েছে।