বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০২:১০ পূর্বাহ্ন

মৌলভীবাজারে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া তালার তিনজনের সম্পর্কে যা বললেন গ্রামবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩১১
প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তারকৃত ১৩ জনের মধ্যে সাতক্ষীরা তালা উপজেলা দক্ষিণ নলতা গ্রামের তিনজন রয়েছে। রবিবার বিকেলে দক্ষিণ নলতা গ্রামে গেলে গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজন ও গ্রামবাসিরা গ্রেপ্তারকৃতরা কোন প্রকার অপতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত ছিল না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ নলতা গ্রামের ওমর আলী মোড়লের ছেলে শরিফুল ইসলাম মোড়ল (৪৫), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪০) ও তাদের মেয়ে হাবিবা বিনতে শরিফুল (২০)। শরিফুল ইসলামের মা ৯০ বছরের বৃদ্ধা ছবিরন বিবি জানান, তিন ছেলের মধ্যে শরিফুল ছোট। রাস্তার পাশে সাইকেল রিক্সা মেরামত করেই সংসার চালাতো শরিফুল। কয়েকদিন হলো সে বাড়িতে আসে না। তবে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে জেলে থাকা একই গ্রামের আনছার সদস্য বজলুর রহমান গাজীর ছেলে জামাতা আমিনুল ইসলাম শান্তকে জামিনে মুক্ত করতে কয়েকদিন আগে সিরাজগঞ্জে গেছে বলে তিনি জেনেছেন। একই গ্রামের মাসুম মোড়লের স্ত্রী রহিমা খাতুন জানান, শরিফুল ইসলামের বাড়িটুকু ছাড়া কোন জমি ছিল না। সাইকেল-রিক্সা মেরামত করেই তার সংসার চলতো। তবে সে কোন অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে এটা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। প্রতিবেশী জোহরা খাতুন বলেন, শরিফুল কোন অন্যায় কাজে যুক্ত থাকতে পারে এটা তারা মানতে পারছেন না। সে ভাল ছেলে। দক্ষিণ নলতা গ্রামের আব্দুল খালেক বলেন, ২৪ জুলাই তার কাছে একটি গরুর বাছুর ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে শরিফুল। এ ছাড়া একটি গাভীও মোটা টাকায় বিক্রি করে সে। এ ছাড়া বন্ধক রাখা অন্যের ১০ শতক জমি ছাড়িয়ে নিয়ে তিনি খেটে চার লাখ টাকা গুছিয়ে জামাতা আমিনুল ইসলাম শান্তকে কারামুক্ত করতে গত ২৫ জুলাই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে সিরাজগঞ্জে চলে যায় শরিফুল। ওরা তিনজন মৌলভীবাজারে জঙ্গী হিসেবে ধরা পড়েছে শুনে তিনি অবাক হয়েছেন। দক্ষিণ নলতা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রান্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তিতু জানান, ভাগ্নে আমিনুল ইসলাম শান্ত তাদের বাড়ি থেকে পড়াশুনা করতো। ২০১৮ সালে দক্ষিণ নলতা গ্রামের শরিফুল ইসলাম মোড়লের মেয়ে তালা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী হাবিবা বিনতে শরিফুলকে ভালবেসে বিয়ে করার পর তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে আমিনুল ইসলাম শান্ত’র। একপর্যায়ে শান্ত সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে পড়াশুনা বাদ দিয়ে খুলনায় ফুড বন্ডেজে চাকুরি করতো। সেখানে তিন বছর কাজ করে রাজশাহী চলে যায়। দুই বছর আছে শান্ত সিরাজগঞ্জে জঙ্গি হিসেবে ধরা পড়ে কারাগারে রয়েছে। জেলে শরিফুল ১৭/১৮ দিন আগে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে মর্মে তিনি শুনেছেন। একইভাবে জঙ্গি হিসেবে তাদেরকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পাহাড়ী এলাকা থেকে শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মর্মে সংবাদ মাধ্যমে তিনি শুনেছেন। খলিলনগর ইউনিয়নের চার নং ওয়ার্ডের ও দক্ষিণ নলতা গ্রামের ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান জানান, শরিফুল, তার স্ত্রী ও মেয়ে জঙ্গি হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় কোন অপ্রতীকর ঘটনার কথা কখনো শোনেননি তিনি। তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চৌধুরী রেজাউল করিম বলেন, এ তিনি সংবাদ মাধ্যমে শরিফুলসহ দক্ষিণ নলতার তিনজনের জঙ্গি হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। তবে অফিসিয়ালি কোন ম্যাসেজ তিনি পাননি। খলিলনগর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ