শ্যামল শীল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ কোভিড এর কারনে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মত উচ্চ শিক্ষার শিক্ষাঙ্গনে নির্বিঘ্নে লেখা পড়া শেষ করার বড় সমস্যা সেশনজট। আগে বিভিন্ন ছাত্র রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষ, রাজপথে আন্দোলন ও অবরােধ বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সেশনজটের সৃষ্টি হলে ও সুষ্ঠু ভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। কিন্তু, কোভিড মহামারীতে দীর্ঘ এগার মাস বন্ধ থাকায় এবং পরিক্ষা না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আবার সেশনজট পড়তে যাচ্ছে এমনটা শঙ্কা করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা।
মার্চ মাসের শুরুর দিকে অনেকের সেমিস্টারের এক থেকে দুটি পরিক্ষা দেয়ার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে পুরাতন সেমিষ্টার শেষ করে নতুন সেমিস্টারের ক্লাস করছেন কিন্তু,পরিক্ষা না হওয়ার সবার মাঝে অনিশ্চিয়তা।কোভিড মহামারির দুই থেকে তিন মাস পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন লাইন ক্লাস শুরু হয়েছে।গত শিক্ষাবর্ষে পরিক্ষা না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছে শিক্ষার্থীরা।দুই সেমিষ্টার পরিক্ষা এক সাথে নেয়ার সিদ্ধান্ত তার পর চলতি বছরের নতুন সেমিস্টারে পরিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীর মাঝে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে।কোভিড মহামারীর দশ মাস পার হলে ও দায়িত্বশীলরা বলতে পারছে না কত দিন শিক্ষাঙ্গন গুলো কবে স্বাভাবিক রূপ ধারন করবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ শিক্ষার্থীরদের ক্ষতি পোষাতে নানা পরিকল্পনা গ্রহন করেন। আশি ও নব্বই দশকের দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্হিরতা, সংঘাত ও সহিংসতায় ঘন ঘন ক্যামপাস বন্ধের ফলে উচ্চ শিক্ষায় সেশনজট পিছু ছাড়েনি।আবার,নব্বইয়ের গনঅভ্যুত্থানে সামরিক শাসন এরশাদ এর পতনের পর এ দেশের গনতান্ত্রিক যাত্রায় বছর গুলোতে শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা কমলে ও মাঝে মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সাথে বিরোধীতার সংঘাত সংঘর্ষ ও আন্দোলনর জের ধরে বিভিন্ন ক্যাম্পাস বন্ধ ছিল।আবার জাতীয় রাজনীতিতে উওাপের ফলে দেশে, হরতাল ও অবরোধের ফলে ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ক্লাস পরিক্ষা বিঘ্নিত হয়েছে।সর্বশেষ ২০১৩-১৪ সালে দশম সংসদ নিবার্চনে ঘিরে বি এনপি জামায়াতে ইসলামী সহিংস আন্দোলন এবং ওই নিবার্চনের বর্ষপূর্তি কে ঘিরে ২০১৫ সালের শুরুতে টানা ৩-৪ মাস হরতাল ও অবরোধ শিক্ষা কার্য বিঘ্নিত হয়।এর পর এই পাচ বছর রাজনৈতিক উওাপহীনতার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না হওয়ায় ধীরে ধীরে সেশনজটের কবল থেকে বেরিয়ে আসে বিশ্ববিদ্যালয় গুলো। কিন্তু, এ দিকে করোনা ভাইরাসের মহামারীর কারনে দীর্ঘ ছুটির জের ধরে সেশনজটের পথে ধাবিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ,আই,এস বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেন বলেন আমাদের স্নাতকের শেষ সেমিস্টারের ক্লাস রুটিন দিয়েছে যা জুলাই তে শুরু হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু কোভিডের কারনে ক্যাম্পাা বন্ধ থাকায় আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সে টা অন লাইনে শুরু হবে।আমরা প্রায় তিন মাস পিছিয়ে গেছি । এ ভাবে চলতে থাকলে সেশনজট এর সম্ভাবনা বেশি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গনযোগাযোগ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ঋতু সাহা বলেন, জুন মাসে আমাদের তৃতীয় সেমিস্টারের ক্লাস শেষ হওয়ার কথা থাকলে ও করোনায় তা শেষ হতে সেপ্টেম্বর লেগে গেছে। কিন্তু,এটার কােন পরিক্ষা হয়নি। এ দিকে অনলাইন সিলেবাস শেষ করতে চতুর্থ সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। কোভিড পরিস্হিতি স্বাভাবিক হলে আমাদের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরিক্ষা নেবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু, সেমিস্টার শেষ হওয়ার পরে ও ক্যাম্পাস খোলার পরে ও পরিক্ষার আগে প্রস্তুতির জন্য কিছু দিন সময় দেয়া হতে পারে।এ দিকে ক্যাম্পাস কবে খুলবে এটার কোন নিশ্চয়তা নেই। এ দিকে পরবর্তী সেমিস্টারে ক্লাস গুলো শুরু হয়েছে। যা পরবর্তী সেমিস্টার গুলো ও সেশনজটের পথে ধাবিত। পরিক্ষা, সেশনজট ও ক্যাম্পাস খেলার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আতংকিত।