HEADLINE
রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় একদিনেই সাতক্ষীরায় পেঁয়াজের দাম দ্বিগুন সাতক্ষীরায় ফের একই পরিবারের ৪ জনকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট আসুন সবাই মিলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতা দূর করি সাতক্ষীরায় ১৫টি যানবাহন ও ৬টি মুদি দোকানে জরিমানা সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় পাতানো নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন দক্ষিণ ফিংড়িতে “শিশু যৌন নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে তারুণ্য” শীর্ষক পথনাটক সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্থিতিশীলতার দিকে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ যুবলীগের অঙ্গীকার আসাদুজ্জামান বাবু এমপি হলে সকল মানুষ পাবে উপকার সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভারতীয় নাগরিক নিহত, আহত ১
রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:১২ অপরাহ্ন

পাইকগাছায় অতিথি পাখি শিকারে চলছে মহোৎসব, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

শাহরিয়ার কবির, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি / ৩৩৬
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

খুলনার পাইকগাছায় রাতের অন্ধকারে কিছু অসাধু চোরাকারবারি ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে চলেছে।জানা যাই উপজেলার চারবান্ধা,গলবুনিয়া,দিঘি,দক্ষিণ কাইনমূখি,নতুন চক,খড়িয়াসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় অতিথি পাখি শিকার করে চলেছে।সন্ধ্যার পর থেকে সারা রাত এ পাখি শিকার করছে বলে এলাকাবাসি জানায়। দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসি।

শীতে অতিথি পাখিরা আসে হিমেল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে। অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়ায় সুখ অনুভব করতে, হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে, দলবেঁধে পাখিরা আসে রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশ আর ঠান্ডা রোদের মিশেল আবহাওয়ার দেশ বাংলাদেশে। শীত মৌসুমে এ দেশে আসে খাবার আর নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।
কারণ, এ সময় সাইবেরিয়াসহ অন্যান্য শীতপ্রধান দেশের তীব্র শীতে তাদের পক্ষে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়। শুধু তাই নয়, তখন তীব্রভাবে খাদ্য সংকটও দেখা দেয়। প্রতিবছরের মতো এ বছরও শীতের শুরুতে সুদূর হিমালয়, সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি  আমাদের দেশে এসেছে। নভেম্বরের শুরু থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অসংখ্য অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে। বিল-ঝিলগুলো মুখর হয়ে ওঠে। পাখির কিচিরমিচির শব্দে আনন্দঘন পরিবেশকে করে তোলে আরো প্রাণবান্ধব। আবার শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে গেলে তারা ফিরে যায়। এদের মধ্যে ডাহুক, তীরশুল, নলকাক, ভাড়ই, রাংগাবনী, গাংচিল, রাতচড়া, হুটটিটি, হারগিলা, বালিহাঁস, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালি কাস্তে, চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাদাখোচা, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া অন্যতম। যেগুলোর মধ্যে অনেক প্রজাতিই বিলুপ্তির পথেরাতের অন্ধকারে কিছু অসাধু চোরাকারবারি ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে। পাখি শিকারিদের হাত থেকে অতিথি পাখিদের রক্ষা করার জন্য এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সচেতন হওয়া দরকার। কারণ সচেতনতা ছাড়া কোনোভাবেই পাখি শিকার বন্ধ করা যাবে না।

অতিথি পাখি অতিথিদের মতোই। এরা আমাদের মেহমানদের মতো। শীত শেষ হলেই এরা চলে যায়। বা অনেক প্রজাতির পাখি আমাদের দেশে থেকে যায়। এরা আমাদের সম্পদ। অতিথি পাখির আগমনে দেশের নদ-নদীর সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আমরা এই অতিথিদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছি। এদেরকে শিকার করছি। আহারের বস্তু বানাচ্ছি।

কারা অতিথি পাখি শিকার করে? অধিকাংশ সময় দেখা যায়, শৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারিরা বন্দুক, বিষটোপ, জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে পাখি শিকার শুরু করে। অনেকে আবার শীতের সময় পখি শিকারকে পেশা হিসেবে নিয়ে নেয়। পেশা হিসেবে যারা নেয়, এটাই হচ্ছে অতিথি পাখিদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর দৃশ্য। তারা রাতদিন দৌড়ায় অতিথি পাখির পেছনে। যার ফলে অতিথি পাখিরা নিরাপদে কোথায়ও বসতে পারে না।

১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু  দুঃখজনক হলেও সত্য, বাস্তবে এ আইনের কোনো প্রয়োগ দেখা যায় না। যদি প্রয়োগ হতো, তাহলে এ রকমভাবে অতিথি পাখি শিকার হতো না।

দেশের বেশ কিছু জায়গাকে এ সময়ে এরা বেছে নেয় নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে। তখন এই জায়গাগুলো অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। এসব জায়গায় এদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। আমার দেশের সবার। একটা পাখির মাংস কতটুকুই বা ১০০-২০০ গ্রাম। এই মাংসের একটু স্বাদ নেওয়ার জন্য তাদের নিধন করবেন! বন্দুক দিয়ে, ফাঁদ পেতে তাদের শিকার করেন? কিন্তু একটু চিন্তা করুন তো, প্রাকৃতিক পরিবেশের কত বড় ক্ষতিটা না আপনি করে ফেলছেন। এমনও হতে পারে, একটি পাখির একটি প্রজাতিও ধ্বংস করে ফেলতে পারেন। এই ভয়ংকর কাজটি আপনি একজন মানুষ হয়ে সামান্য লোভে পড়ে করে ফেলবেন? কিন্তু একটি প্রজাতি ধ্বংসের মুখে পড়ছে, সেটা নিয়ে ভাববেন না?


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ