বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন

পাঁচ সাংবাদিকের নামে হওয়া মামলার তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পায়নি পিবিআই

নিজস্ব প্রতিনিধি / ৪৩
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩

সাতক্ষীরায় পাঁচ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলার তদন্তে কোন সত্যতা পায়নি তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলায় উল্লেখিত পেনাল কোড ধারার অপরাধের কোন স্বাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়া ও পাঁচ সংবাদিকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী রেজাউল করিম।  আদালতে এই মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। বুধবার (১৬ আগস্ট) সাতক্ষীরার তালা আমলী আদালতে মামলার প্রতিবেদন দাখিলের ধার্যদিন ছিলো। 

মামলার বিবাদীরা হলেন , ঢাকা পোস্টের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সোহাগ হোসেন, ঢাকা মেইলের প্রতিনিধি গাজী ফারহাদ, স্থানীয় দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার প্রতিবেদক হোসেন আলী, দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার প্রতিনিধি শাহীন বিশ্বাস ও দৈনিক মুক্ত খবরের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান সোহাগ।

অপরদিকে, মামলার বাদী সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রামের মৃত. জব্বার সরদারের ছেলে জহুর আলী সরদার। 

মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাদী জহর আলী সরদার তালার আটারই গ্রামে শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির ব্যবস্থাপক। মামলার বিবাদীরা ওই ফুড প্রোডাক্টস্ কোম্পানির ব্যবস্থাপকের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চলতি বছরের ২৭ মার্চ কোম্পানীর সামনে বিবাদীরা পুনঃরায় চাঁদা দাবি করে ও একই সাথে বাদীর কাছে থাকা ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। 

এ সকল বিষয় উল্লেখ করে গত ২ এপ্রিল জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দাখিল করেন শপিং ভ্যালী ফুড প্রোডাক্টস নামের ওই কারখানার ব্যবস্থাপক। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাতক্ষীরাকে আগামী ২৩ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে দুই দফায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বৃদ্ধি করে আদালত। বুধবার (১৬ আগস্ট) মামলা প্রতিবেদনের দালিখ ধার্য দিন ছিলো। 

তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য  শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস্ নামের সেমাই কারখানাতে যায়। সেখানে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী ও যন্ত্রাংশের ছবি সংগ্রহ করে সাংবাদিকরা। একই সাথে সেখানকার ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা জহর আলী সহ অন্য কর্মচারীদের  সাথে কথোপকথন হয় সাংবাদিকদের। তথ্য সংগ্রহ, স্থির ছবি গ্রহণ ও কর্মচারীদের সাথে কথোপকথন শেষে স্থান ত্যাগ করেন সাংবাদিকরা।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ্য রয়েছে, মামলায় উল্লেখ করা  বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করেছেন  পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তা। একই সাথে বাদীর মনোনীত মামলার তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে। তবে বাদীর কাছে চাঁদা চাওয়া ও টাকা ছিনতাইয়ের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া মামলার নথিতে যে অপরাধের পেনাল কোডগুলো উল্লেখ রয়েছে সেগুলোর কোনটার সাথে বিবাদীদের কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মামলার বাদী জহর আলী সরদার বিবাদীদের বিরুদ্ধে চাঁদা চাওয়া ও ছিনতাইয়ের কোন প্রকার প্রমাণ দিতে পারিনি। 

এ বিষয়ে মামলার প্রতিবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আগামী ১০-ই সেপ্টেম্বর সময় নির্ধারণ করেছে বিচারিক আদালত। 

উল্লেখ্য, কোন প্রকার সংবাদ প্রকাশ না করে কিংবা ওই ফুড প্রোডাক্ট কোম্পানিতে না গিয়ে হয়রানিমূলক মামলার শিকার হন ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি সোহাগ হোসেন। এদিকে, পাঁচ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কর্মরত সাংবাদিকরা নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সাথে সাতক্ষীরার জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা মিথ্যা মামলার নিন্দা জানিয়ে মানববন্ধন করেন। তাছাড়া, পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার লিখিত নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সাতক্ষীরা ২৫ জন বিশিষ্ট সাংবাদিক।


এই শ্রেণীর আরো সংবাদ